জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের ব্রিফিংয়ে উঠল বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিখ
ফাইল ছবি: জাতিসংঘ

বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগসংক্রান্ত আল-জাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্পর্কে জাতিসংঘ অবগত। দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কেও জাতিসংঘ অবগত রয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক ৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর দপ্তরে নিয়িমিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে এই ব্রিফিং ও প্রশ্ন-উত্তরের বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে। বিবরণ অনুসারে,স্টিফেন ডুজারিকের ব্রিফিংয়ের শেষ দিকে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নটি ছিল আল-জাজিরার সাম্প্রতিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে দুর্নীতির অভিযোগ ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য সেনাবাহিনীর গুপ্তচরবৃত্তির সরঞ্জাম কেনার দাবির বিষয়ে আল-জাজিরার অনুসন্ধানে উঠে আসা তথ্যের ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য জানতে প্রশ্নটি করা হয়।

প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগসংক্রান্ত আল-জাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্পর্কে তাঁরা অবগত আছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কেও তাঁরা অবগত।

স্টিফেন ডুজারিক বলেন, দুর্নীতির অভিযোগগুলো একটি গুরুতর বিষয়। এ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্ত করা উচিত। তিনি বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে উর্দিধারী সদস্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় অংশগ্রহণকারী। জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুসারে এ ধরনের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে, এমন প্রতিটি শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য দেশটির সঙ্গে জাতিসংঘের চুক্তিতে এই প্রয়োজনের প্রতিফলন থাকে। আল-জাজিরার তথ্যচিত্রে যেসব ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের কথা বর্ণনা করা হয়েছে, তার প্রয়োজনীয়তার কথা কোনো চুক্তিতে উল্লেখ করেনি জাতিসংঘ। আর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বাংলাদেশ কনটিনজেন্টসে এ ধরনের সরঞ্জামও রাখা হয়নি।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দানীতি অনুসরণ করতে হয়। তবে একটি অভিযানে জাতিসংঘ সদস্যদের নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রয়োজনে যোগাযোগে আড়িপাতা হয়েছিল। সেটাও করা হয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা গোয়েন্দানীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে ও বাহিনী কমান্ডারের মিশন কর্তৃত্বের আওতায়।

উল্লেখ্য, কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি এই প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আইএসপিআর গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। এতে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ব্যবহারের জন্য হাঙ্গেরির একটি কোম্পানি থেকে কেনা সিগন্যাল সরঞ্জামাদিকে ইসরায়েল থেকে আমদানিকৃত মোবাইল মনিটরিং প্রযুক্তি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় ইসরায়েল থেকে প্রতিরক্ষাসামগ্রী ক্রয় বা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গ্রহণের কোনো অবকাশ নেই।