জুলহাস–তনয় হত্যা মামলায় আট আসামির মৃত্যুদণ্ড চাইল রাষ্ট্রপক্ষ

জুলহাস মান্নান ও মাহবুব তনয়
ফাইল ছবি

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তাঁর বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলার আট আসামির মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আজ রোববার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্কের শুনানির সময় এই আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গোলাম ছারোয়ার খান জাকির।

গোলাম ছারোয়ার জানান, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়েছে। আগামীকাল আসামিপক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করার দিন ঠিক করেছেন আদালত।

এদিন মামলার চার আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এই আসামিরা হলেন মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান, মো. শেখ আবদুল্লাহ জোবায়ের ও আসাদুল্লাহ। আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মো. জুনাইদ আহমদ।

২০১৯ সালের ১৩ মে জুলহাস মান্নান ও তাঁর বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটটিসি)।
২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় কলাবাগানের বাসায় ঢুকে জুলহাস মান্নান (৩৫) ও তাঁর বন্ধু মাহবুবকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। জুলহাস ও মাহবুবকে হত্যা করে পালানোর সময় বাধা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লাকেও কুপিয়ে আহত করেন। পালানোর সময় রাস্তায় এক হামলাকারীকে জাপটে ধরেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মমতাজউদ্দিন। তাঁকেও কুপিয়ে পালিয়ে যায় ওই সন্ত্রাসী। তবে এএসআই মমতাজ হামলাকারীদের একজনের কাছ থেকে একটি ব্যাগ রেখে দিতে সক্ষম হন। ওই ব্যাগে একটি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মুঠোফোন পাওয়া যায়।

জুলহাস সমকামীদের অধিকারবিষয়ক সাময়িকী রূপবান সম্পাদনা ও প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নাট্যকর্মী মাহবুব পিটিএ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’ হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে কলাবাগান থানায় করা দুই মামলা তদন্ত করে সিটিটিসি। আনসার আল ইসলাম দুজন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। সংগঠনটি নিজেদের আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা বলে দাবি করে।