টিকা তৈরিতে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব চায় বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি পরিবেশ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মার্সিয়া বার্নিকাটের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশের দক্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করতে দেশটির সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশ এ ধরনের অংশীদারিত্বের জন্য ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে।

ওয়াশিংটন সফররত প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি পরিবেশ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মার্সিয়া বার্নিকাটের সঙ্গে আলোচনায় এ অনুরোধ জানান।

ওয়াশিংটন থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে মার্শা বার্নিকাট বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পিপিইর পাশাপাশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং থেরাপিউটিক সামগ্রী উৎপাদন সম্প্রসারণের পরিকল্পনায় বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেবে।

বিজ্ঞিপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করা হয়। জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাব নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান কোভ্যাক্সের মাধ্যমে বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ টিকার ৫৫ লাখেরও বেশি ডোজ সরবরাহ করায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি কোভিড-১৯ মোকাবেলায় টিকা এবং অন্যান্য মহামারি-ব্যবস্থাপনা সরঞ্জামাদির বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে দেশটির কর্মকর্তাদের বৈঠক করেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা
ছবি: সংগৃহীত

বৈঠকে শ্রমিকের অধিকার ও সুরক্ষা, জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা, বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং ঢাকা থেকে নিউ ইয়র্কে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টা দেশে শ্রমিকের অধিকার এবং সুরক্ষা আরও উন্নত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গৃহীত বিভিন্ন নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে বার্নিকাটকে অবহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ খাতে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়েছে এবং আরও অগ্রগতি অর্জনে তাদের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করার সাম্প্রতিক পদক্ষেপের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

উভয় পক্ষই স্বীকার করে যে, ২০২০ সালের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৈঠক দুই দেশের মধ্যে চলমান সহযোগিতাকে গতি দিয়েছে এবং তারা এই বছরের শেষের দিকে পরবর্তী অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৈঠক আয়োজনে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলাম, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।