ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ রোধে জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ চলছে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) অসংগতি ও আইনটির অপপ্রয়োগ বন্ধে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের সঙ্গে কাজ করছে। আইনটির অধীনে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। গত রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম কূটনীতিকদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন। পাশাপাশি তাঁরা কূটনীতিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধে যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, সেটি আইনমন্ত্রী কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছেন।

সূত্র জানায়, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকদের জানান, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে আইসিটি অ্যাক্ট ২০০৬-এর একটি সেলের কাছে চলে যাবে। সেই সেল তদন্ত করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়ার মতো উপাদান পেলেই কেবল মামলাটি নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অসংগতি দূর করা ও অপপ্রয়োগ বন্ধের বিষয়ে আইনমন্ত্রী জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন।

সম্প্রতি ওভারসিজ করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওকাব) আয়োজিত এক মিট দ্য প্রেসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে তাঁকে আগে সমন দিতে হবে। মামলা হওয়ার পর সাংবাদিক আদালতে জামিন চাওয়ার সুযোগ পাবেন।

একই অনুষ্ঠানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অসংগতি দূর করতে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আইন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ছয় সদস্যের একটি টিম (দল) গঠন করা হয়েছে। আইন প্রয়োগের কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, তা খুঁজে বের করতে ওই টিম জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয়ের সঙ্গে কাজ করছে। যদি তারা এমনটা খুঁজে পায়, তাহলে আইনটি সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।