ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইট শুরু হতে পারে ২৬ মার্চ থেকে: বিমানের এমডি

রাজধানীর কুর্মিটোলায় বলাকা ভবনে আজ সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তারা
ছবি: সংগৃহীত

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা–টরন্টোর ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বিমান জানিয়েছে, টরন্টোতে ফ্লাইট চালানোর লক্ষ্যে বিমানের প্রস্তুতি কার্যক্রম চলছে।

রাজধানীর কুর্মিটোলায় বলাকা ভবনে আজ সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্যাসেঞ্জার সার্ভিস সলিউশন ও অনলাইন টিকিটিং পুনরায় চালু উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিউইয়র্কের ফ্লাইট চালুর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দল বাংলাদেশে কাজ করছে। আর করোনার কারণে জাপানে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেই ঢাকা–নারিতা ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা–টরন্টো ফ্লাইট চালুর বিষয়ে এগোচ্ছি। এই রুটে ফ্লাইট চালাতে গিয়ে ১৭টি শর্ত ছিল। এর মধ্যে ১৫টি পূরণ করা হয়েছে। বাকি দুটি শর্তপূরণের কার্যক্রম চলমান আছে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমরা নতুন নতুন রুটে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি অচিরেই ঢাকা–টরন্টো, নিউইয়র্ক, মালেতে বিমান ফ্লাইট চালানো শুরু করব।’

বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দীর্ঘ ৬ মাস ১৮ দিন পর গতকাল রোববার থেকে বিমানের প্যাসেঞ্জার সার্ভিস সলিউশন এবং ডিপার্চার কন্ট্রোল সিস্টেমসহ আনুষঙ্গিক সেবা শুরু হয়েছে। গতকাল থেকে পুনরায় বিমানের ওয়েবসাইটে অনলাইন টিকিট বুকিং, কেনাসহ বিভিন্ন সেবা পাওয়া যাচ্ছে। অচিরেই অ্যাপের মাধ্যমে এসব সেবা পাওয়া যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চমূল্যের টিকিট, কার্গো ফ্লাইটের লাভ–ক্ষতি, পুরোনো বিমান কেনাসহ কয়েকটি ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ছয় মাস বিমানের ওয়েবসাইটে টিকিট কেনা বন্ধের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হয়েছে কি না—এই প্রশ্নের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘ট্রাভেলশপ বিমানকে ই–কমার্স ও লজিস্টিক সেবা দিত। গত বছরের ১০ আগস্টে এই সেবা বন্ধ করতে আমরা বাধ্য হয়েছি। ট্রাভেলশপের সঙ্গে বিমানের চুক্তি ছিল। তারা চুক্তিবহির্ভূতভাবে সেবাগুলো বন্ধ করেছে। এ কারণে অনলাইনে টিকিট কেনা বন্ধ ছিল। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।’

করোনাকালে বিমান কয়টি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করেছে, কত টাকা আয় হলো এবং এসব প্যাসেঞ্জার উড়োজাহাজে কার্গো ফ্লাইট চালানোয় বিমানের উড়োজাহাজগুলোর কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে—এসব প্রশ্নের জবাবে বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২১ সালের আগস্টে ৪১ কোটি, সেপ্টেম্বরে ৭০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। এভাবে কয়েক শ কোটি টাকা আয় হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য এয়ারলাইনসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও করোনাকালে বিমান লাভ করেছে বলে জানিয়েছে তারা।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অনুমতি নিয়ে কার্গো ফ্লাইট করা হয় বলে সাংবাদিকদের জানান বিমানের বিপণন এবং বিক্রয় পরিদপ্তরের পরিচালক এয়ার কমোডর (অব.) মো. মাহবুব জাহান খান। তিনি বলেন, করোনাকালে যখন আকাশপথে চলাচল বন্ধ হয়ে গেল, তখন উড়োজাহাজ বসিয়ে রাখলে খরচ বেশি হবে। এ কারণে কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। উড়োজাহাজগুলো বসিয়ে রাখলে মাসে ৫০ কোটি টাকার একটা খরচ হতো। উড়োজাহাজে যেসব ছোটখাটো ক্ষতি হয়েছে, সেগুলো বিমানের প্রকৌশলীরা নিয়মিত চেক করে ঠিক করা হয়। অস্বাভাবিক কোনো ক্ষতি হয়নি।