ঢাকা-লন্ডন অংশীদারত্ব সংলাপ আগামী সপ্তাহে

তিন বছর ধরে যুক্তরাজ্যে যেতে হলে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসার আবেদন মূল্যায়ন করা হচ্ছে ভারতে। এতে করে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতার অভিযোগ করে আসছেন বাংলাদেশের নাগরিকেরা। ঢাকায় অনুষ্ঠেয় প্রথম অংশীদারত্ব সংলাপে ভিসা মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে লন্ডনকে অনুরোধ জানাবে ঢাকা।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের প্রথম অংশীদারত্ব সংলাপ ২৮ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বাংলাদেশের এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি সায়মন ম্যাকডোনাল্ড তাঁর দেশের নেতৃত্ব দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে জানান, ব্রেক্সিটের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ইইউ দেশগুলোতে যে সুবিধা পায়, তা যুক্তরাজ্য থেকে অব্যাহত রাখতে আগ্রহী। ফলে আলোচনায় এ বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গত বছরের মার্চে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাজ্য। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে এরপর যুক্তরাজ্যের একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি। অংশীদারত্ব সংলাপে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ।
ভিসা প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে একজন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাজ্যে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশের লোকজন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও ভিসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। অনেকে এটাও অভিযোগ করছেন, ভারতে মূল্যায়নের কারণে তাঁরা ভিসা পাচ্ছেন না। তাই ভারতের পরিবর্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসার মূল্যায়ন এখানে করার অনুরোধ জানানো হবে। তিনি জানান, ওই ভিসা প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ১১ হাজার বাংলাদেশি একটি পিটিশন সই করে আবেদন জানালেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেনি যুক্তরাজ্য সরকার।
দুই দেশের প্রথম অংশীদারত্ব সংলাপে এই বিষয়গুলো ছাড়াও যুক্তরাজ্য অবৈধভাবে অবস্থানকারী বাংলাদেশের লোকজনকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। যুক্তরাজ্য দাবি করে আসছে, সে দেশে ২০ হাজার বাংলাদেশি অবৈধভাবে বাস করছে। তবে ওই সংখ্যাটি উল্লেখ করে কোনো তালিকা দিতে পারেনি যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত লোকজনের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
জানা গেছে, দুই দেশের কর্মকর্তারা সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দমন এবং সামরিক সহযোগিতা নিয়েও কথা বলবেন।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক গতকাল তাঁর দপ্তরে প্রথম আলোকে বলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে প্রথম অংশীদারত্ব সংলাপে ব্যবসা ও বিনিয়োগ, উন্নয়ন, ভিসা ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।