তাঁদের অর্জন চট্টগ্রামবাসীর জন্য কম গৌরবের নয়

চট্টগ্রাম দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। কিন্তু এবার এ অঞ্চল থেকেই চার গুণীজন একুশে পদক পেয়েছেন। এটি চট্টগ্রামবাসীর জন্য কম গৌরবের নয়। এই চারজনের জ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্য চর্চায় সমৃদ্ধ হচ্ছে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষ। একুশে পদকপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের চার গুণীজনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি। সংবর্ধিত অতিথিরা হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বংশীবাদক ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন এবং ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া।
সুকুমার বড়ুয়া ছাড়া অন্য তিনজনের হাতে ফুল ও স্মারক তুলে দেন চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মাহফুজুল হক চৌধুরী। শারীরিক অসুস্থার জন্য সুকুমার বড়ুয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর মেয়ে রঞ্জনা বড়ুয়া ফুল ও স্মারক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার নাহিদ খান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন, চট্টগ্রাম থেকে একুশে পদক পাওয়া চারজনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্য ও গুণী ব্যক্তি। আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকার সময় শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করার জন্য অনেক সংস্কার এনেছিলেন। দায়িত্ব পালনের সময় শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন দৃঢ়চেতা মানুষ। আবুল মোমেনের লেখা পড়ে অনেকেই উপকৃত হয়েছে। তাঁর বিশ্লেষণ অত্যন্ত নির্মোহ। ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম অনেক উঁচু মাপের বংশীবাদক। সুকুমার বড়ুয়ার ছড়া অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী।
শিক্ষায় একুশে পদক পাওয়া ইমেরিটাস অধ্যাপক আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, পড়তে হবে, দেখতে হবে ও শুনতে হবে। স্পষ্টভাবে যুক্তিসহকারে কথা বলতে হবে।
সাংবাদিকতায় একুশে পদকপ্রাপ্ত আবুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি তরুণ। এ দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে রাষ্ট্র পাল্টাতে পারলেও এখনো সমাজ পাল্টানো সম্ভব হয়নি। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন আধুনিক সমাজ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন একুশে পদক বিজয়ী ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আলী আশরাফ। অনুষ্ঠানে আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম এবং সাংবাদিক আবুল মোমেনের পরিচিতি পাঠ করেন যথাক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল হক, ছড়াকার উৎপল কান্তি বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের সাবেক প্রধান বেগম মমতাজ এবং প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী।