তুলির আঁচড়ে নতুন রূপ পাচ্ছে প্রতিমা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার রঘুনাথ জিউর আখড়ায় প্রতিমা তৈরির শেষ মুুহূর্তের কাজে ব্যস্ত একজন কারিগর প্রথম আলো
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার রঘুনাথ জিউর আখড়ায় প্রতিমা তৈরির শেষ মুুহূর্তের কাজে ব্যস্ত একজন কারিগর প্রথম আলো

শরৎ এলেই শুরু হয় দেবী দুর্গাকে আহ্বানের আয়োজন। প্রতিবছরের মতো এবার শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে।
এখন চলছে রংতুলির আঁচড় দেওয়ার কাজ। এ জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিমাশিল্পীরা।
একই সঙ্গে তোরণ নির্মাণ ও মণ্ডপগুলো বর্ণিল সাজে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পূজা উদ্যাপন কমিটি। গত বছরের তুলনায় এবার মণ্ডপের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার দাস বলেন, এবার জেলায় ৫২৩টি মণ্ডপের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ৭৮টি পূজামণ্ডপ করা হয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভায় আছে ৩৯টি এবং বাকি ৩৯টি বিভিন্ন ইউনিয়নে আছে। সেই সঙ্গে নাজিরনগর উপজেলায় ১৩৫টি, সরাইলে ৪৫টি, বিজয়নগরে ৫২টি, আশুগঞ্জে ১০টি, আখাউড়ায় ১৯টি, কসবায় ৪৪টি, নবীনগরে ১০১টি ও বাঞ্ছারামপুরে ৩৯টি মণ্ডপে পূজার প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে।
গত শুক্রবার সকালে শহরের দক্ষিণ কালী মাতা মন্দির, আনন্দময়ী কালীমন্দির ও পাইকপাড়ার রামঠাকুর মন্দিরের পূজামণ্ডপে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরি শেষ। এখন সেগুলোকে বিভিন্ন রঙে সাজাচ্ছেন শিল্পীরা। আর তা দেখতে ভিড় করছে এলাকার শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
কান্দিপাড়া রঘুনাথ জিউর আখড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ছয় থেকে সাতজন শিল্পী প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত। প্রতিমাশিল্পী মিন্টু পাল বলেন, ১০-১৫ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকার মন্দিরের পূজা উদ্যাপন কমিটির চাহিদামতো তিনি প্রতিমা তৈরি করছেন।
অন্যদিকে শহরের দক্ষিণ কালী মাতা মন্দিরে প্রতিমা তৈরি করছেন ঝন্টু পাল। তিনি বলেন, শুধু টাকার জন্য নয়, প্রতিমা তৈরির নেশা থেকে তিনি প্রতিবছর বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা তৈরির কাজ করেন। সর্বোচ্চ দেড় লাখ থেকে ৮০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মূল্যের প্রতিমা তৈরি করছেন এবার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। মণ্ডপগুলোকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ—এই তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৫টি মণ্ডপকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।