দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্বাস্থ্য জনবল বাংলাদেশে সবচেয়ে কম

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্বাস্থ্য জনবল বাংলাদেশে সবচেয়ে কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ১ হাজার মানুষের জন্য কমপক্ষে ২২ দশমিক ৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী (চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফসহ অন্যান্য) প্রয়োজন। বাংলাদেশে আছেন ৫ দশমিক ৮ জন।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য জনবল কৌশলপত্র ২০১৫’-তে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে কৌশলপত্র প্রকাশ করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, কৌশলপত্র খুব একটা কাজে লাগবে না, যদি মন-মানসিকতার পরিবর্তন করা না হয়। জনবল নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে পদ্ধতি বদলাতে হবে। অনেক কর্মকর্তা ২৪ ঘণ্টার কাজ করতে ২৪ দিন নেন। এর পরিবর্তন দরকার।

সরকারি ওই দলিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য জনবল হচ্ছে সাড়ে ৩ লাখ। এর মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার কাজ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে। ৩৫ হাজার বিকল্প স্বাস্থ্যসেবা (হোমিওপ্যাথি, ইউনানি, আয়ুর্বেদ) দেন। বাকি ১ লাখ ৬০ হাজার বেসরকারি খাতে সেবা দেন। এ ছাড়া প্রায় ১৪ লাখ গ্রাম্য চিকিৎসক আছেন।

কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যকর্মী রাখা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য জনবল কৌশলপত্রের মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ শাজেদুল হাসান। তিনি বলেন, প্রয়োজন অনুসারে জনবলের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, সর্বস্তরে দক্ষ ও মানসম্পন্ন জনবল নিয়োগ, জনবল বণ্টনে সমতা আনা, স্বাস্থ্যকর্মীদের উচ্চমান ধরে রাখার উদ্দেশ্যে এই কৌশলপত্র করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সরকার অনেক অবকাঠামো করেছে, অনেক যন্ত্রপাতি কিনেছে। কিন্তু জনবলের অভাবে তা চলছে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেই বললেই চলে। কিন্তু তাঁদের ছাড়া মানসম্পন্ন সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। নিয়োগপ্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।

আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহাজন ওয়াহিদ হোসেন।

স্বাস্থ্যসচিব মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের।