দুটি তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক স্থাপন করতে ১১ প্রতিষ্ঠান বাছাই
কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক স্থাপনে প্রাথমিকভাবে দেশি-বিদেশি সাতটি এবং কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারে প্রস্তাবিত সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের জন্য চারটি উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। এগুলোর মধ্য থেকে এখন চূড়ান্ত প্রতিষ্ঠান ঠিক করার প্রক্রিয়া চলছে। এসব প্রতিষ্ঠানই পার্কের সার্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, অবকাঠামো নির্মাণ, বিনিয়োগকারীদের পার্কে আসা নিশ্চিত করা এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে।জানতে চাইলে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন চূড়ান্তভাবে উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি এ বছরের মধ্যেই কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের জন্য উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে কাজ শুরু করা যাবে। জনতা টাওয়ারের জন্য আগামী ছয় মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে জায়গা বুঝিয়ে দিতে পারব বলে আশা করছি।’উল্লেখ্য, বাছাইকৃতদের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে আবেদন করেছে। মূল্যায়নে তাদের একটি উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের লক্ষ্যে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান করা হয়। গত ১ মার্চ ইওআই দাখিলের শেষ সময় পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ১৬টি প্রতিষ্ঠান ইওআই দাখিল করে। এগুলোর মূল্যায়ন শেষে সম্প্রতি সাতটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়। এগুলোর মধ্যে কেউ কেউ যৌথভাবে আবেদন করেছে। সূত্রমতে, সম্প্রতি বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কমিটির সভায় এ সংক্ষিপ্ত তালিকা অনুমোদনও করা হয়। উল্লেখ্য, প্রতিমন্ত্রী হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কমিটির সভাপতি। বাছাই করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো : মালয়েশিয়ার কালিম টেকনোলজি পার্ক করপোরেশন, ভারতের মাহিন্দ্র লাইফ স্পেস ডেভেলপার লিমিটেড, ইনফিনিটি ইনফোটেক পার্ক লিমিটেড, কেএসএম ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ইনফো সিটি লিমিটেড (যৌথভাবে), বাংলাদেশের সামিটের সঙ্গে যৌথভাবে ভারতের দুটি প্রতিষ্ঠান ভুবনা ও আরএসপি ডিজাইন কনসালট্যান্ট (ভারত) প্রাইভেট লিমিটেড, ডিপন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস লিমিটেড ও এমএসসি টেকনোলজি সেন্টার (যৌথভাবে) এবং কোরিয়ার হুন্দাই ডেভেলপমেন্ট। ইওআই জমা দিয়ে বাদ পড়েছে নয়টি প্রতিষ্ঠান। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাছাই করা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে এখন ‘রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল (আরএফপি)’ চাওয়া হবে। যাদের প্রস্তাব সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হবে, তাদের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হবে। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সূত্রমতে, এ পার্কের জন্য বাছাইকৃতদের মধ্য থেকে এখন এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানকে উন্নয়নকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, আগে সম্পূর্ণ সরকারি উদ্যোগে পার্ক হওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও তা পরিবর্তন করে এখন সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে পার্ক নির্মাণ করা হবে। উল্লেখ্য, সরকার গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরে তালিবাবাদ উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্রের অব্যবহূত ২৩১ দশমিক ৬৮৫ একর জমিতে একটি হাইটেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় ১৯৯৯ সালের ১৭ জুলাইয়ে। এ পার্কের জন্য এখন পর্যন্ত ওই জায়গায় সীমানা প্রাচীর দিয়ে একটি প্রশাসনিক ভবন তৈরিসহ প্রাথমিক কিছু কাজ হয়েছে মাত্র। জনতা টাওয়ার: কারওয়ান বাজারে জনতা টাওয়ারে ‘সফটওয়্যার টেকনোলজি’ পার্ক স্থাপনকাজে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছিল। তার মধ্যে কেএসএম ইঞ্জিনিয়ারিং ও ক্রিয়েটিভ ইনফো সিটি লিমিটেড (যৌথভাবে), ডিপন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস লিমিটেড ও এমএসসি টেকনোলজি সেন্টার (যৌথ), ভয়ান্টস সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড ও সিপিএম ফার্স্ট গ্রোথ ইনফ্রাস্ট্রাকচার (যৌথ) এবং টেকনোপার্ক বাংলাদেশ ও গ্রিনটেক ডেভেলপারস লিমিটেড (যৌথ) নামে চার উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের উন্নয়নকারী হতে আবেদন করে। এগুলোর মধ্য থেকে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হবে।সূত্রমতে, ১২ তলা ভবনটির প্রায় ৬০ হাজার বর্গফুট জায়গায় সফটওয়্যার শিল্প-সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভবনটির বিভিন্ন তলায় দরজা, জানালা, বৈদ্যুতিক কাজসহ অভ্যন্তরীণ সজ্জার কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। লিফট স্থাপন করা হয়নি।