দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ১১, ৫২৫ রোগী শনাক্ত, মৃত্যু ১৬৩ জনের

করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে
প্রথম আলো ফাইল ছবি

দেশে একদিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল আটটা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত) ১১ হাজার ৫২৫ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সোয়া এক বছর ধরে চলমান এই মহামারিতে আজ প্রথমবারের মতো একদিনে শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যায় এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩৬ হাজার ৬৩১জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। আগের দিন সোমবার ৯ হাজার ৯৬৪ জনের সংক্রমণ শনাক্তের তথ্য জানানো হয়। এ দিন মৃত্যু ছিল ১৬৪ জনের।


সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৪০৬। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৩৯২ জনের।
অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৪৩৩ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সেখানে কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে রোগী শনাক্ত ২০ শতাংশের বেশি হচ্ছে।


২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে। দেশে এ বছরের মার্চ থেকে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় টানা বিধিনিষেধ চলছে।

এবার করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয় গত ঈদুল ফিতরের পরপরই। ভারত সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে রোগী দ্রুত বাড়তে থাকে। পরে তা আশপাশের জেলায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা, মৃত্যু ও শনাক্তের হার কয়েক গুণ বেড়েছে।

পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় ২২ জুন থেকে ঢাকাকে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই প্রচেষ্টায় ঢাকার আশপাশের চারটি জেলাসহ মোট সাতটি জেলায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের চলাচল ও কার্যক্রম ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

তবে এরপরও করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ২৮ জুন থেকে সারা দেশে সব গণপরিবহন ও মার্কেট-শপিং মল বন্ধ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন, বন্ধ রয়েছে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। সর্বাত্মক লকডাউন ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।