ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

নেত্রকোনার মদনে ধর্ষণের শিকার হয়ে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্থানীয় থানা-পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর কথা রয়েছে।

মারা যাওয়া শিশুটির বাড়ি উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের একটি গ্রামে। শিশুটির পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশুটি শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মেয়েটির মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, গত মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টার দিকে তাঁর মেয়ে বাড়ির সামনের দোকানে মশার কয়েল আনতে যায়। এ সময় প্রতিবেশী এক কিশোর (১৫) তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করে। মেয়ে বাড়িতে এসে বিষয়টি মাকে জানায়। কিন্তু মা লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন। বুধবার দুপুরে মেয়ে বাড়ির সামনে বের হলে ছেলেটি আবারও কুপ্রস্তাব দেয় ও অশ্লীল কথাবার্তা বলে। এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

পরে আজ সকালে মেয়েকে বিষ খেয়ে বাড়ির সামনে পড়ে থাকতে দেখে তিনি চিৎকার–চেঁচামেচি করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে সবাই মিলে তাকে মদন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মেয়েটির মা বলেন, তাঁর মেয়ে ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।

মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কাজী বুশরা আমীনা বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়। কীটনাশক পান করায় তার মৃত্যু হয়েছে।

মদন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) উজ্জ্বল কান্তি সরকার বলেন, বিষপানে এক শিশু আত্মহত্যা করেছে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় তার মৃতদেহ থানায় এনে রাখা হয়েছে। শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মারা যাওয়া শিশুটির মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী এক কিশোরকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী রাত পৌনে নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এ কে এম মনিরুল ইসলামকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির মায়ের অভিযোগটি মামলায় রূপান্তরিত হবে।