
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) নাম ও প্রতীক ব্যবহার করে নকল রাইস স্যালাইন তৈরির অভিযোগে গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তর বাড্ডার সাঁতারকুলের একটি কারখানা সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কারখানার মালিকসহ পাঁচজনকে দণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
দণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কারখানার মালিক আবদুল ছিদ্দিককে (৩৫) দুই বছরের কারাদণ্ড ও তাঁর শ্যালক নবীন খানকে (২৬) এক বছরের কারাদণ্ড এবং দুজনকেই এক লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিন মাস করে কারাদণ্ড, কারখানার কর্মী কবির হোসেন (২৬), স্বপন (২২) ও মাসুদ আকনকে (৩০) ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গরম বাড়তে থাকায় পেটের অসুখ বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে স্যালাইনের চাহিদা। আইসিডিডিআরবির কর্মচারী সমিতির তৈরি রাইস স্যালাইনটি ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদিত না হলেও বাজারে এর চাহিদা রয়েছে। সেই সুযোগে কিছু ঠগবাজ আইসিডিডিআরবির নাম ও প্রতীক ব্যবহার করে নকল স্যালাইন তৈরি করে বাজারে ছাড়ছে।
গতকাল যে কারখানায় অভিযান চালানো হয়, সেটি সাঁতারকুলের আবদুল্লাহবাগে চার কক্ষের একটি টিনশেড বাড়িতে অবস্থিত। সূত্র জানায়, মাসিক ১৪ হাজার টাকায় বাড়িটি ভাড়া নিয়ে করা কারখানাটির জন্য কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। উত্পাদিত স্যালাইন জীবাণুর সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য কারখানার ভেতরের পরিবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের নিয়ম থাকলেও এই কারখানার পরিবেশ ছিল নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে। মেঝেতে রাখা বস্তা থেকে পটাশিয়াম ক্লোরাইড, খাবার লবণ, খাবার সোডা এবং চালের গুঁড়া পলি ব্যাগে ঢুকিয়ে প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। উপকরণগুলো খাবার উপযোগী নয়। আইসিডিডিআরবির লোগোসহ নকল প্যাকেট পল্টন থেকে বানিয়ে আনা হয়েছে। এই কারখানায় দিনে আট হাজার প্যাকেট স্যালাইন বানানো হয় বলে আবদুল ছিদ্দিক ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানিয়েছেন।
অভিযানে র্যাব-১-এর সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও ছিলেন।