নতুন বাজার থেকে রামপুরা ব্রিজ আলাদা রিকশা লেন

রাজধানীর অন্যতম যানজটপ্রবণ সড়ক প্রগতি সরণিকে যানজটমুক্ত করতে রাস্তার দুই পাশে আলাদা রিকশা লেন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।
এরই অংশ হিসেবে নতুন বাজার মোড় থেকে সুবাস্তু টাওয়ার পর্যন্ত বাঁ পাশের প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে আলাদা রিকশা লেন। কিছু দূর পরপর প্লাস্টিকের ছোট খুঁটি। মাঝে নাইলনের দড়ি টানিয়ে মূল সড়ক থেকে রিকশার লেনটি আলাদা করা হয়েছে, যা প্রস্থে প্রায় আট ফুট। এই পথে চলাচলকারী যাত্রী, রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনের চালক ও দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বলছেন, এই ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে সড়কের এই অংশে যানজটের মাত্রা আগের থেকে অনেক কমেছে। ফিরে এসেছে শৃঙ্খলা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তর বিভাগের উপকমিশনার (ট্রাফিক) প্রবীর কুমার রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই সড়কে যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে উল্টো দিক থেকে রিকশা চলাচল। যা যান্ত্রিক গাড়ির গতি থামিয়ে দেয়। দুর্ঘটনাও বেশি ঘটে। তাই ডিএমপির কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার নির্দেশে পরীক্ষামূলকভাবে গত বৃহস্পতিবার নতুন বাজার মোড় থেকে সুবাস্তু টাওয়ার পর্যন্ত অস্থায়ী লেনটি তৈরি হয়েছে। এতে আমরা ভালো ফল পাচ্ছি।’ এই সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বাজার মোড় থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে স্থায়ী একটি লেন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন প্রবীর কুমার। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। পর্যায়ক্রমে রামপুরা ব্রিজের অপর অংশেও লেনটি বিস্তৃত করা হবে।’
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন বাজার মোড় থেকেই রিকশাগুলো সারিবদ্ধভাবে আলাদা লেন ধরে ছুটে চলেছে। পাশেই বাস, প্রাইভেট গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহনও চলছে নির্বিঘ্নে। সেখানেই কথা হলো একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আফরোজা খানমের সঙ্গে। তিনি মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বললেন, ‘আগে এখান থেকে রিকশায় বাসা পর্যন্ত পৌঁছাতে আধা ঘণ্টাও লেগে যেত। এখন ১০ মিনিটেই পৌঁছাতে পারছি।’
ওই রিকশার চালক নূর ইসলামের ভাষ্য, ‘গাড়ি গুলান তো বাবা চাক্কার মইধ্যে রিসকা আটকায়া দেয়। ডরও লাগে। এহন ভালোই হইছে।’
তবে দুই কিলোমিটারের মধ্যে রাস্তার অপর পাড়ে যাওয়ার কোনো ক্রসিং না থাকায় খানিকটা অসুবিধা হচ্ছে বলে জানালেন আরেক রিকশাচালক শফিকুল ইসলাম।
ডিসি ট্রাফিক প্রবীর কুমার বলেন, ‘এটি খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। স্থায়ী লেন নির্মাণের আগে অবশ্যই সবার সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনা করা হবে। এ জন্য সবার সহযোগিতাও আমাদের প্রয়োজন।’ মূল সড়কে রিকশা না চলায় স্বস্তি প্রকাশ করে বিহঙ্গ পরিবহনের চালক মজনু মিয়া বলেন, ‘রিকশা আর গাড়ির লেন আলাদাই হওয়া উচিত। এতে দুই পক্ষেরই সুবিধা।’ নতুন বাজার ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বসে সার্জেন্ট মাহাবুব বললেন, রিকশার জন্য আলাদা লেন চালু হওয়ার আগে রাস্তায় ওপর প্রতিদিনই দুই-চারটা ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটত। এখন সেটা অনেক কমে এসেছে।