
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ইছামতী নদীতে আড়াআড়ি বাঁশের বেড়া ও অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁরা স্থানীয় মৎস্যজীবীদের নদীর ওই এলাকায় নামতে দিচ্ছেন না।
সরেজমিনে গত বুধবার (১ মে) বেলা ১১টার দিকে দেখা যায়, উপজেলার চিকাশি ইউনিয়নের ঝিনাই গ্রামসংলগ্ন ইছামতী নদীর তিনটি স্থানে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাই গ্রামের রায়হান আলীসহ স্থানীয় ১০-১২ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি এ বাঁধ দিয়েছেন বলে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। বাঁশের ওপরের অংশে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে কারেন্ট জাল। পানি বেড়ে গেলেও যাতে বেড়ার ওপর দিয়ে মাছ চলে যেতে না পারে, সে জন্যই এ ব্যবস্থা। স্থানীয়ভাবে এটাকে বলা হয় ‘কাইটা বানা’। প্রায় এক মাস ধরে এভাবে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এই বাঁধের কারণে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি ছোট-বড় সব মাছই ধরা পড়ায় ভবিষ্যতে নদীতে মাছের সংকট দেখা দিতে পারে বলে স্থানীয় জেলেদের আশঙ্কা।
ঝিনাই গ্রামের মৎস্যজীবী আফজাল হোসেন বলেন, ‘হামাইগরে গ্রামোত কয়েকজন ক্ষমতাবান মানুষ লদীর মধ্যি বাঁশের বেড়া আর জাল দিয়া মাছ ধইরা বিক্রি করিচ্ছে। তাগোর দাপটে হামরা খাওয়ার জন্নি দুই-এটা মাছও ধরোত পারিচ্ছি না। এভাবে লদীর মাছ ধরা পড়লে কোনো মাছ বংশ বিস্তার করতি পাবি না।’
বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার কথা স্বীকার করেন রায়হান আলী। তিনি বলেন, তাঁরা গ্রামের কয়েকজন মিলে এবারই প্রথম নদী থেকে মাছ ধরার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে রায়হান দাবি করেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ দিয়ে মাছ না ধরার নিষেধাজ্ঞা-সংক্রান্ত আইনের কথা তিনি জানেন না। এখন জানার পর বাঁধ সরিয়ে নেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ‘না’ সূচক জবাব দেন।
গ্রামবাসী বলছেন, তাঁরা এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। তবে তাতে কোনো কাজ হয়নি।
উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদুল আলম বলেন, নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বাঁধ ও জাল দিয়ে মাছ ধরা বেআইনি। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।