নবজাতককে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন সেই মা

নবজাতক সন্তান কোলে ইতি আক্তার, গত রোববার তাঁকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল নামের ক্লিনিকের কর্মীরা
ছবি: প্রথম আলো

সন্তান জন্মের পর প্রসূতি ইতি আক্তারকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে ফেলে পালিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের একটি ক্লিনিকের কর্মীরা। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাঁকে ঢাকার মাতুয়াইলের শিশু-মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। তিন দিন চিকিৎসার পর আজ বুধবার নবজাতককে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তিনি।

ইতি আক্তারের স্বামী মো. তানভীর মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালের দিকে তাঁর স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথাসহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছিল। শিশু-মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকেরা তখন তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। দুপুরের দিকে ইতি আক্তারকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। এর মধ্যে তাঁর স্ত্রীর বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট কমে এলে সেখানকার চিকিৎসকেরা রোগীকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন।

সন্ধ্যায় স্ত্রী–সন্তানকে বাড়ি নেওয়ার কথা জানান তানভীর। তিনি বলেন, এখনো তাঁর স্ত্রী কিছুটা অসুস্থ। তবে চিকিৎসকেরা বলেছেন, রোগীকে ভালো খাবার খাওয়ালে ঠিক হয়ে যাবে। ছেলের কোনো সমস্যা নেই।

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের জন্য ১৮ হাজার টাকার চুক্তিতে ইতি আক্তারকে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল এলাকার পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন তানভীর। গত রোববার সকালে সেখানে অস্ত্রোপচারে তাঁর একটি ছেলেসন্তান হয়। ওই সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিবন্ধনহীন ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধের অভিযান চলছিল সারা দেশে। সেখানেও অভিযান হতে পারে, সেই ভয় থেকে ইতি আক্তারকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে ফেলে বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন ক্লিনিকের কর্মীরা।

খবর পে‍য়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল শাখা) মাহমুদুর রহমান ও তাঁর সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইতি আক্তারসহ কয়েকজন মা ও তাঁদের নবজাতকদের উদ্ধার করে মাতুয়াইলের শিশু-মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।

আরও পড়ুন

তানভীর ও ইতি পড়াশোনা করেননি। ইতির বাড়ি নেত্রকোনায় আর তানভীরের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোডের সিআর খোলা বউবাজার নামের একটি জায়গায় ভাড়া বাসায় থাকেন তাঁরা। তানভীর একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। স্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জের ওই ক্লিনিকে ভর্তি করার সময়ই ১২ হাজার টাকা জমা করেছিলেন বলে জানান তিনি।

ক্লিনিকে ইতি আক্তারের অস্ত্রোপচারে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কেউ চিকিৎসক নন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবীর জানান।