নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা পেলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরবে: ফিলিপ্পো গ্রান্ডি

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেছেন, বিশ্বের অন্যান্য জটিল পরিস্থিতির মতোই রোহিঙ্গা সংকটকে ভুলতে পারেন না তাঁরা। ইউক্রেনের বিপর্যয়কর জরুরি পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপরও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

শনিবার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি ঢাকায় এসেছেন। কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে দাতাদের ভূমিকা রাখা যে জরুরি, সফরে তা তুলে ধরবেন তিনি। রোববার তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি একটি ভিডিও বার্তা দেন; যা জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার ওয়েবসাইটে তোলা হয়েছে।

ভিডিও বার্তায় ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেছেন, সম্প্রতি আফগানিস্তান ও ক্যামেরুন সফর করেছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা তিনি বাংলাদেশেও কাজে লাগাতে চান।

গ্রান্ডি বলেন, ‘জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার একটি অগ্রাধিকারমূলক অংশীদার দেশ সফরের অংশ হিসেবে আমি বাংলাদেশে এসেছি। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকটও আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে।’

হাইকমিশনার বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান প্রকল্প পরিদর্শন এবং রোহিঙ্গা নারী–পুরুষ, এই জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় নেতা, পরিবেশকর্মী ও গত কয়েক দশক ধরে যাঁরা রোহিঙ্গা শিবিরে আছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলা খুব কার্যকর একটি বিষয় হবে। তিনি বলেন, তাঁদের প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে সবাই অনেকটা একমত। অধিকাংশ রোহিঙ্গা তাঁদের নিজ দেশে (মিয়ানমারে) ফিরে যেতে চান।

ভিডিও বার্তায় ফিলিপ্পো গ্রান্ডি আরও বলেন, নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পেলেই তাঁরা মিয়ানমারে যেতে চান। বর্তমানে তাঁরা রাষ্ট্রহীন জনগোষ্ঠী। দেশে ফেরার পর চলাফেরার স্বাধীনতা ও কাজের নিশ্চয়তা চান রোহিঙ্গারা।

আরও পড়ুন

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন–নিপীড়ন ও জ্বালাও–পোড়াও শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশে এটি ফিলিপ্পো গ্রান্ডির তৃতীয় সফর। এর আগে তিনি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ও ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ সফরের এক মাস পর মিয়ানমার সফর করেন তিনি।

ইউএনএইচসিআরের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক ইন্দ্রিকা রাতওয়াত ও হাইকমিশনারের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হারভে ডি ভিলেরোচে ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন।