নাছিরের পক্ষে ব্যানার, ভোট প্রার্থনা

আয়োজন ছিল চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে সনাতনী নাগরিক সমন্বয় কমিটির মতবিনিময় সভার। কিন্তু সেই সভায় দেখা গেল মেয়র পদে নাছিরের পক্ষে ভোট চেয়ে ব্যানার। এমনকি কয়েকজন বক্তাও তাঁর পক্ষে সরাসরি ভোট চেয়েছেন।
গতকাল রোববার বিকেলে নগরের জেএম সেন হলে এ মতবিনিময় সভা হয়। হল চত্বরের দুই পাশে ছিল সভা সফল করার আহ্বানসংবলিত ব্যানার। এর মধ্যে চারটি ব্যানারে মেয়র পদে নাছিরকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়। চারটি ব্যানারের তিনটি ছিল জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোটের নামে।
ভোট গ্রহণের ২১ দিনের আগে প্রচার-প্রচারণা ও ভোট চাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই হিসাবে প্রচারণা শুরু হবে ৭ এপ্রিল থেকে।
ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি নাগরিক কমিটির প্রার্থী নাছিরের পক্ষে সরাসরি ভোট না চাইলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল-সমর্থিত চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলমের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। তিনি বলেন, পাঁচ বছরে মনজুর আলম চট্টগ্রাম শহরকে ডাস্টবিনের শহরে পরিণত করেছেন। পাঁচ বছরে প্রবর্তক মোড়েও কোমরপানি হয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বন্দর থেকে ১১২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনকে। এই টাকা কোথায় গেল, জনগণ তা জানতে চায়।
মনজুর আলমের খামারবাড়িতে পেট্রলবোমা পাওয়া গেছে দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, পেট্রলবোমা হামলার অর্থ জোগান দিয়েছেন মনজুর। জঙ্গিদের যারা অর্থায়ন করে তাদের চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রতিহত করতে হবে। তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, তাদের সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করবে; না যারা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করতে চায়, তারা জয়লাভ করবে—তা এই নির্বাচনের মাধ্যমে ফয়সালা হবে।
সভায় জন্মাষ্টমী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজল কান্তি দত্ত বলেন, ‘আমরা অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তির পক্ষে দাঁড়িয়েছি। ২৮ তারিখের নির্বাচনে নাছির ভাইকে জয়যুক্ত করুন।’
আইনজীবী তপন কান্তি বলেন, ‘২৮ তারিখ পর্যন্ত কাজ করব ওনাকে (নাছির) জিতিয়ে আনার জন্য।’
মতবিনিময় সভায় কিছুক্ষণের জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন মেয়র পদপ্রার্থী নাছির। তিনি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘সনাতন সম্প্রদায়ের অনেক দুঃখ, কষ্ট ও অভিমান থাকতে পারে। তবে আপনারা সনাতন সম্প্রদায় বলে দুর্বল ও অসহায় মনে করবেন না। আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, আপনাদের সুখে-দুঃখে আপনাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।’
রাউজান পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান দেবাশীষ পালিতের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জিনবোধি ভিক্ষু ও জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য রণজিৎ কুমার ধর, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হয়দার চৌধুরী, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দন বিশ্বাস।