নির্যাতিত ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল গঠনের দাবি
নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। রোববার নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে ব্লাস্ট এই দাবি জানান।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্লাস্ট জানায়, নির্যাতনের ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু, অঙ্গহানি বা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হলে তাঁর বা তাঁর পরিবারের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার কোনো ব্যবস্থা বিদ্যমান আইনে নেই। আইনে নির্যাতনকারীর শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির জন্য কোনো প্রতিকারের বিধান নেই। যদিও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে একজন ব্যক্তি নির্যাতনের শিকার হন। ফলে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণসহ অন্যান্য প্রতিকার প্রদান করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কারণ রাষ্ট্রের সংবিধান নিশ্চয়তা প্রদান করেছে যে, কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ব্লাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এড. জেড. আই খান বলেন, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে যেকোনো ব্যক্তির ওপর যেকোনো প্রকারের নির্যাতন রোধে রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে নির্যাতনকারী ব্যক্তি, সে যেই হোক না কেন তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
ব্লাস্ট জানায়, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা ভারতসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে। ব্লাস্ট মনে করে বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা থাকা উচিত। এ ছাড়া নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের যথোপযুক্ত চিকিৎসা সুনিশ্চিত করা ও ফরেনসিক সাক্ষ্য প্রদানের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতিকার প্রদানে চিকিৎসকদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিস কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, এই বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে মোট ১০ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ‘হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু (নিবারণ) আইন’ পাশ করা হয় কিন্তু ওই আইনে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের বিধান ও ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া আইনটি গত ২০১৩ সালের অক্টোবরে পাশ হলেও প্রায় ৭ বছর পর গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে দেশে প্রথম এই আইনে দায়ের করা মামলার রায় হয়েছে।