নীরব ছিলেন খালেদা, হাওয়া ভবন সম্পৃক্ত

১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের কথা শুনে নীরব ছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদ জিয়া। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক সাদিক হাসান রুমী তাঁকে অস্ত্র আটকের কথা জানিয়েছিলেন। রায় ঘোষণার সময় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এসএম মজিবুর রহমান তাঁর পর্যবেক্ষণ আজ বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, সাক্ষীদের জবানবন্দির ভিত্তিতে এ মামলায় হাওয়া ভবনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিমকে টাকা দিতে উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিনের মাধ্যমে টাকা দেন এআরওয়াই গ্রুপ। এ গ্রুপের আবদুর রাজ্জাক ইউসুফের সঙ্গে পাকিস্তানের আইএসআইয়ের যোগাযোগ ছিল বলেও পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে।

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, এ মামলা দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখানে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (এনএসআই) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন। এসব কর্মকর্তা বিভিন্ন সময় তাঁদের জবানবন্দিতে ও যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁরা একে অন্যকে জড়িয়ে যেসব কথা বলেছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে তাদের সঙ্গে উলফার যোগাযোগ ছিল। তাঁরা এটা স্বীকারও করেছেন। এনএসআইয়ের মহাপরিচারক তাঁদের সহায়তায় সস্ত্রীক দুবাই বেড়াতে গিয়েছিলেন বলে স্বীকারও করেছেন। মেজর লিয়াতক স্বীকার করেন যে

উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া ও অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। তিনি এ নিয়ে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। অস্ত্র আটকের সময় মেজর লিয়াকত নিজেকে আবুল হোসেন পরিচয় দিয়ে বাধা দিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছিলেন।

বিচারক আরও বলেন, ডিজিএফআইয়ের তত্কালীন মহাপরিচালক সাদিক হাসান রুমী সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জানিয়েছিলেন, তিনি তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এ ঘটনা জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এ কথায় তখন নীরব ছিলেন। এ ঘটনাও মামলায় এসেছে।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার (সিইউএফএল) জেটিঘাটে খালাসের সময় দেশের ইতিহাসে অস্ত্রের সবচেয়ে বড় চালান আটক হয়। এ ঘটনায় ২০০৪ সালের ৩ এপ্রিল দুটি মামলা হয়। অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। এ ছাড়া অস্ত্র আটক মামলার দুটি ধারায় এই ১৪ জনকে যাবজ্জীবন ও সাত বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।