ন্যায়বিচার পাওয়ার আস্থা রাখি: আনিসুল হক

সিএমএম আদালত প্রাঙ্গনে লেখক আনিসুল হক।
ছবি: সাজিদ হোসেন

প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও লেখক আনিসুল হক বলেছেন, ‘আমরা আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আদালতের মাধ্যমেই ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আস্থা রাখি।’

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার একটু পরে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত প্রাঙ্গণে আনিসুল হক এসব কথা বলেন। রোজিনা ইসলামের রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার ঘটনায় প্রথম আলোর পক্ষ থেকে মামলা করা হবে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা জামিনের জন্য আগে আবেদন করি। আমরা জামিনটা আগে পাই। এরপর মামলা যদি করতে হয়, তবে মামলা করা হবে। এটা আইনের ব্যাপার।’

আনিসুল হক আরও বলেন, ‘কিন্তু আইনের বাইরে একজন নাগরিক হিসেবে, সাংবাদিক হিসেবে, একজন লেখক হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক হিসেবে আমি বলতে চাই, স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে দেশের সব সাংবাদিককে এক হতে হবে। আপনারা আওয়াজ তুলুন, এই মামলা আজকেই প্রত্যাহার করা হোক।’

আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা সরকারের সহযোগী, আমরা প্রশাসনের সহযোগী। আমরা দুর্নীতির খবর তুলে না ধরলে সরকার কীভাবে জানবে দেশে দুর্নীতি হচ্ছে। কাজেই আমরা সরকারের উপকার করার চেষ্টা করছি এবং রোজিনা ইসলাম তাঁর পেশাগত দায়িত্বপালন করে যাচ্ছিলেন।’

এই লেখক আরও বলেন, এজাহারে রোজিনা ইসলাম দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারেন—এমন কথা রয়েছে বলে শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘সচিবালয়ে গিয়ে তিনি যে পরিস্থিতির মোকাবিলা করলেন, তাতে পৃথিবীর কাছে কি আমাদের মুখ উজ্জ্বল হলো, নাকি অনুজ্জ্বল হলো? ভাবমূর্তি কারা ক্ষুণ্ন করছে?’ আনিসুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের উচ্চ মহলকে বলব, আমরা যদি সরকারের, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাই, তবে এই মামলা নিঃশর্তভাবে এখনই প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক।’

আনিসুল হক বলেন, ‘আমি প্রথম আলোর পক্ষ থেকে বলছি না। আমি আনিসুল হক একজন লেখক হিসেবে বলছি, আমি বাংলাদেশের একজন ভোটার হিসেবে বলছি, আমি একজন করদাতা হিসেবে বলছি —সাংবাদিকতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। সেই অধিকার কায়েম করতে গিয়ে সাংবাদিকেরা যদি জুলুমের শিকার হন, তবে তা সাংবাদিকতার জন্য ভালো না, দেশের জন্য ভালো না, সুশাসনের জন্য ভালো না, এটা প্রশাসনের জন্য ভালো না, এটা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যায় না।’

আনিসুল হক বলেন, ‘আমার মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর বইগুলোয় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবন্ধে লিখেছেন, আমাদের জাতির পিতা একজন সাংবাদিক ছিলেন। এই প্রবন্ধ পড়ে আমাদের মুখ উজ্জ্বল, মাথা উঁচু হয়েছে। সেখানে সাংবাদিককে নির্যাতন করা হয়েছে, তাঁকে (রোজিনা ইসলাম) আটকে রাখা হয়েছে। এটা হেনস্তা ছাড়া কিছুই না। কাজেই নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে।’