নড়াইলে করোনা শনাক্তের হার ৮২ শতাংশ

করোনাভাইরাসের পরীক্ষা
ফাইল ছবি

নড়াইলে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় জেলায় শনাক্তের হার ৮২ দশমিক ২৫ শতাংশ। এখন পর্যন্ত এটিই জেলায় সর্বোচ্চ শনাক্তের হার। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৬২৮। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে জেলার কালিয়া ও লোহাগড়া উপজেলার চিত্র আরও উদ্বেগজনক। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুয়ায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কালিয়া উপজেলায় ২১ জনের মধ্যে ২০ জন শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৯৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। অন্যদিকে লোহাগড়া উপজেলায় ১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই উপজেলায় শনাক্তের হার ৯৪ দশমিক ১২ শতাংশ।

তবে তুলনামূলকভাবে সদর উপজেলায় শনাক্তের হার কিছুটা কম। এখানে ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৫ জন শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ। জেলায় বর্তমানে আরটি-পিসিআর, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন ও জিন এক্সপার্ট—এই তিন পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংক্রমণ রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. আবদুল গনি জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এই টেস্টে যাঁদের ফলাফল নেগেটিভ এসেছে, তাঁদের জিন এক্সপার্ট টেস্ট করা হয়েছে। দুই পদ্ধতি মিলিয়ে আজ ১৬ জনের মধ্যে ১৫ জন শনাক্ত হয়েছে।

তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মানুষের অসচেতনতার জন্য ভয়াবহ এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে। লোকজন প্রশাসন দেখলে মাস্ক পরছেন। করোনায় আক্রান্ত রোগীও তথ্য গোপন করে রাস্তায়, বাজারহাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উপসর্গ দেখা দিলেও নমুনা পরীক্ষা না করে নিজে দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। এতে সংক্রমণ পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

এদিকে জেলায় গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা পয৴ন্ত করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল সদর হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন করে মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত ৯ দিনের মধ্যে ৭ দিনই সংক্রমণের হার ৩৪ থেকে ৪৮ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করেছে। এর আগের সপ্তাহে (১৩-১৯ জুন) ৭ দিনের মধ্যে ৫ দিন শনাক্তের হার ৩৫ থেকে ৫১ শতাংশ পর্যন্ত ওঠানামা করেছে। তার আগের সপ্তাহেও শনাক্তের হার ছিল ৩৫ শতাংশের ওপরে।

২০ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত জেলাজুড়ে দ্বিতীয় দফার সর্বাত্মক লকডাউন চলমান ছিল। এই লকডাউনের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে জেলার কয়েকটি এলাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত লকডাউন চলেছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সংক্রমণ রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শফিক তমাল বলেন, লকডাউনের ১৪ থেকে ২১ দিন পর এর ফল পাওয়া যায়। বর্তমান শনাক্ত রোগীরা লকডাউনের আগেই সংক্রমিত হয়েছেন। এখন জেলার নমুনাগুলো পরীক্ষার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। ২৫ জুন থেকে সেখানে প্রায় সাড়ে তিন শ নমুনা অপেক্ষমাণ। সেগুলোর ফলাফল এলে শনাক্তের হার কমবে বলে আশা করা যায়।