শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

EN
English
  • সর্বশেষ
  • বিশেষ সংবাদ
  • রাজনীতি
  • করোনাভাইরাস
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
বাংলাদেশ

পদক বিবেচনায় নিরাপদ সড়ক ও কোটা আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১: ৪৭
>

• মোট পদকপ্রাপ্ত ৩৪৯ জন
• ঢাকার ১৯ জন আন্দোলন দমন/নিয়ন্ত্রণ/প্রশমনে ভূমিকা রেখেছেন

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সময় আল-জাজিরায় সাক্ষাৎকার দেওয়ায় খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহিদুল আলম কিংবা কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাশেদ খানকে গ্রেপ্তার—পুলিশের কৃতিত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে গণ্য হয়েছে এ বছর। কেন পদক পাওয়ার যোগ্য, তার ব্যাখ্যায় ঢাকায় ১৯ জন কর্মকর্তা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে তাঁদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবছর পুলিশ সপ্তাহে অসীম বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজ এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ পেশাদারি প্রদর্শনের জন্য পুলিশ সদস্যরা পুরস্কৃত হয়ে থাকেন। এ বছর বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম), বিপিএম (সেবা), রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) ও পিপিএম (সেবা) পুরস্কার পেয়েছেন ৩৪৯ জন। এত বেশিসংখ্যক পুলিশ সদস্যের পুরস্কৃত হওয়ার নজির আর নেই। প্রতিবছরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন।

বিপিএমপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা সম্মানী হিসেবে এককালীন এক লাখ টাকা এবং মাসিক দেড় হাজার টাকা, বিপিএম সেবা পদকপ্রাপ্তরা এককালীন ৭৫ হাজার টাকা এবং মাসিক দেড় হাজার টাকা, রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকপ্রাপ্তরা (পিপিএম) সম্মানী হিসেবে এককালীন ৭৫ হাজার টাকা ও প্রতি মাসে এক হাজার টাকা এবং পিপিএম-সেবা পদকপ্রাপ্তরা সম্মানীর জন্য এককালীন ৫০ হাজার টাকা ও মাসিক এক হাজার টাকা পান।

এ বছর সর্বোচ্চ পদক বিপিএম পেয়েছেন ৪০ জন। তাঁদের মধ্যে আছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তাঁর পদক পাওয়ার পক্ষে ১০টি অর্জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে রয়েছে ‘নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন চৌকস ও বুদ্ধিদীপ্ত পন্থায় সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ’ এবং এরপর ‘চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ’। বলা হয়েছে কোমলমতি ছাত্রদের অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে একদল স্বার্থান্বেষী মহল বিপুলসংখ্যক গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ধানমন্ডি ৩/এ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর করে। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহবাগে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, মিরপুর পুলিশ লাইনস, কাফরুল থানাসহ রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগ না করে আন্দোলন মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। তিনি পুলিশের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। তা ছাড়া তাঁর যথাযথ পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনার মাধ্যমে ঢাকা মহানগর পুলিশ কোটা আন্দোলনকারীদের জনবিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসাত্মক কাজ প্রতিরোধ করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে। তাঁর এ দূরদর্শী নেতৃত্ব অনন্যসাধারণ উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মীর শহীদুল ইসলামের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের তালিকায় আছে নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুলছাত্রদের আন্দোলন ও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আগাম গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া। বলা হয়েছে, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন একপর্যায়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। আর কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক জোট পুঁজি করে নাশকতার চেষ্টা করছে—এমন গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে দিয়ে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। একই কৃতিত্বের দাবিদার এসবির উপমহাপরিদর্শক মাহবুব হোসেন ও এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ও এসবির পুলিশ পরিদর্শক এ কে এম সাহাবুদ্দীন শাহীন, উপপরিদর্শক মো. মহিউদ্দীন। তাঁরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে কুচক্রী মহল শনাক্ত করেন এবং জানতে পারেন, এ দুটি আন্দোলন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এগুলো সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিতে পারে।

ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী শফিকুল আলমের কৃতিত্বপূর্ণ অবদান আটটি। এর মধ্যে ২ নম্বরে আছে শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার। তিনি লিখেছেন, ‘ড. শহীদুল আলম, সাংবাদিক, দৃক গ্যালারির মালিক কর্তৃক আল-জাজিরা টিভি চ্যানেলে দেশবিরোধী প্রচারণা করায় গ্রেপ্তার।’

ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আশিকুর রহমান তাঁর সাত কৃতিত্বের উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে গুজব ছড়িয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং রাশেদ খানকে গ্রেপ্তার। অবদানের জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুক লাইভে কটূক্তিকারী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির মদদদাতা রাশেদ খানকে গ্রেপ্তার।’ আশিকুর পেয়েছেন পিপিএম-সেবা পদক।

ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. শাহাদত হোসেন সুমা পাঁচটি কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন। তার একটি নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগে ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীকে গ্রেপ্তার। উল্লেখ্য, বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রকাশ ও এর জেরে মিলহানুর গ্রেপ্তার হন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচানোর জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ নূরুল আমীন। পিপিএম-সেবা পদক পাওয়া এই কর্মকর্তা নিজস্ব কৌশলে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন প্রশমন করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যানার/ফেস্টুনে অশোভন স্লোগানের পরিবর্তে সুন্দর স্লোগান লিখে দেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব এতে করে কমে আসে বলে উল্লেখ করেছেন। বিষয়টি সিএনএন ও আল-জাজিরায় ফলাও করে প্রচার করা হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ থেকে আরও পড়ুন
  • পুলিশ
  • কোটা সংস্কার আন্দোলন
  • আইনশৃঙ্খলা
  • নিরাপদ সড়ক আন্দোলন
  • পুলিশ পদক
মন্তব্য করুন