পরিচয়পত্র না পাওয়ায় ভোগান্তি ভিসা নিয়েও উদ্বেগ

হজ ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সেখান থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন হজযাত্রীরা l ‍ছবি: প্রথম আলো
হজ ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সেখান থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন হজযাত্রীরা l ‍ছবি: প্রথম আলো

হজযাত্রীদের জন্য নির্ধারিত পরিচয়পত্র না পাওয়ায় হজ ক্যাম্পে এসে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক যাত্রী। ভিসা জটিলতা না কাটায় হজযাত্রা নিয়ে উদ্বেগে আছেন অনেকে।

এদিকে বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর যাত্রীদের জন্য পরের ফ্লাইটগুলোতে ১০ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে হজ এজেন্টরা।

গতকাল শনিবার রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে অবস্থিত আশকোনা হজ ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, বিকেলে বা রাতে যাঁদের ফ্লাইট, তাঁরা নিচতলার মসজিদের সামনে বসে আছেন। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। হজযাত্রার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন হজযাত্রীরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ১৮৫ জন হজযাত্রী গত শুক্রবার হজ ক্যাম্পে এসেছেন। হজযাত্রীদের একজন রবিউল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আসছি। কাউকেই পাসপোর্ট, টিকেট দেয় নাই। দু-এক দিনের মধ্যেই ফ্লাইট বলে আশ্বস্ত করছে।’

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যেক হজযাত্রীকে একটি পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। হজ ক্যাম্পে প্রবেশ, ডরমিটরিতে যাতায়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এই পরিচয়পত্র দেখাতে হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা হজযাত্রীদের অধিকাংশই এই পরিচয়পত্র পাননি।

হজযাত্রী আবদুর রশিদ বলেন, ‘এজেন্সির কারণে ক্যাম্পে এসে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। আইডি কার্ড দেয় নাই। ডরমিটরিতে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে। লিফটে উঠতে দিচ্ছে না। বেশির ভাগই আইডি কার্ড পায় নাই।’

জানতে চাইলে রাজ ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মো. আবদুল জব্বার বলেন, অনেকে আইডি কার্ড পাননি এটা ঠিক। প্রিন্টিংয়ে সমস্যা হওয়ায় তাঁদের আইডি কার্ড দেওয়া যায়নি। তাঁদের কাগজপত্র প্রস্তুত, বিমানে ওঠার আগে আইডি কার্ডও দিয়ে দেওয়া হবে।

হজ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত সৌদি আরবে গিয়ে পৌঁছেছেন ৩৯ হাজার ২৪৮ জন হজযাত্রী। গতকাল সকাল পর্যন্ত ভিসা পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৮৭৯ জন হজযাত্রী। তবে বিকেলে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল সারা দিনে প্রায় ৯ হাজার যাত্রী ভিসা পেয়েছেন।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। গত ২৪ জুলাই থেকে বাংলাদেশ বিমান হজযাত্রী পরিবহন শুরু করে। বাংলাদেশ বিমান মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জনকে পরিবহন করছে। অন্যরা যাচ্ছেন সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে।

হজ অফিস সূত্রে জানা যায়, ভিসা জটিলতা, মোয়াল্লেম ফিসহ নানাবিধ কারণে যাত্রীরা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। ভিসা জটিলতার কারণে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করেছে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইনস। টিকিট পেয়েও ভিসা জটিলতায় জেদ্দায় যেতে পারেননি অনেক যাত্রী। যাঁরা নির্ধারিত ফ্লাইটে যেতে পারেনি, তাঁদের পরের ফ্লাইটগুলোতে জেদ্দায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে। এবার হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ২৫ আগস্ট।

এ বিষয়ে হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রথম আলোকে বলেন, বাতিল হওয়া হজ ফ্লাইটের যাত্রীসংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অন্যান্য ফ্লাইটে এসব যাত্রীর ৭ শতাংশ রিপ্লেসমেন্টের (বরাদ্দ) কথা বলেছে, এটি যথেষ্ট নয়। এই হার কমপক্ষে ১০ শতাংশ করতে হবে। তবে হজযাত্রীদের কোনো হয়রানি বা না যেতে পারার আশঙ্কা নেই।