স্বীকৃতিবিহীন প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি নিয়ে চাকরি পাওয়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ হাজারের বেশি সহকারী গ্রন্থাগারিককে শর্ত সাপেক্ষে এমপিওভুক্ত (বেতন-ভাতা বাবদ মাসিক সরকারি অংশ) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সরকারের শেষ সময়ে গত মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে। কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করার পর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের সূত্রমতে, গত সেপ্টেম্বর মাসের এমপিওভুক্তির টাকা ইতিমধ্যে ছাড় হয়ে যাওয়ায় সহকারী গ্রন্থাগারিকদের আগামী নভেম্বরের এমপিওভুক্তির সময় এই সুবিধা দেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী গ্রন্থাগারিক বা ক্যাটালগার পদে যাঁরা বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন, কিন্তু গ্রন্থাগার বিজ্ঞানের অর্জিত সনদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় অথবা সরকারের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের নয়, তাঁরা পাঁচটি শর্তে এমপিওভুক্তির জন্য বিবেচিত হবেন। শর্তের মধ্যে রয়েছে তাঁদের পরবর্তী তিন শিক্ষাবর্ষের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউজিসি স্বীকৃত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (কোর্স অনুমোদন থাকাসহ) গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে সনদ অর্জন করতে হবে। এর আগ পর্যন্ত তাঁরা সহকারী গ্রন্থাগারিকদের এক ধাপ নিচের স্কেলে এমপিও সুবিধা পাবেন। তবে পরে যথাযথ সনদ অর্জনের পর নির্ধারিত স্কেলে বেতন পাবেন; কিন্তু কোনো বকেয়া পাবেন না। আর যাঁরা তিন শিক্ষাবর্ষের মধ্যে সনদ অর্জন করতে পারবেন না, তাঁদের এমপিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
গত জানুয়ারি পর্যন্ত যোগদানকারী ও এমপিওর জন্য আবেদনকারী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই এই সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে।
পরিপত্র অনুযায়ী, যাঁদের সনদ ভুয়া অথবা জাল প্রমাণিত হবে, তাঁদের নিয়োগ বাতিল করা হবে এবং জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফৌজদারি মামলা করবে। আর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরও সনদ যাচাই করে এমপিওভুক্ত করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির সূত্রমতে, বিতর্কিত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ শাখাসহ বিভিন্ন ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিয়ে কয়েক হাজার সহকারী গ্রন্থাগারিক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি পান। অনেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সনদ সংগ্রহ করেও চাকরি নেন। কিন্তু এমপিওভুক্তির আবেদনের সময় দেখা যায়, বেশির ভাগের সনদ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের নয়। এ কারণে তাঁদের এমপিওভুক্তি দিচ্ছিল না সরকার। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করেন এসব গ্রন্থাগারিক।