পাঁচ কিশোরী পাচারের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে পাঁচ কিশোরীকে ভারতে পাঠানোর কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তি। গত শুক্রবার কিশোরগঞ্জ আদালতের জ্যেষ্ঠ মুখ্য বিচারিক হাকিম ইকবাল মাহমুদ তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করেন। দেলোয়ার উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা।

কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির রাব্বানী গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওসি জানান, দেলোয়ার ঢাকায় থাকতেন। তিনি শ্রমজীবী ছিলেন। ঢাকায় থাকার সময় মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে তাঁর সখ্য গড়ে ওঠে। পরে তিনি গ্রাম থেকে দরিদ্র পরিবারের বেশ কয়েকজনকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাঠান। একই গ্রামের দোলেনা বেগমও (২৪) অন্য একটি চক্রের মাধ্যমে পাচার হন। মাসখানেক আগে দোলেনা দেশে ফিরে এসে দেলোয়ারের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে মানব পাচার ব্যবসায় নামেন। এই দুজনের প্রথম শিকার হয় দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের মৃত আইন উদ্দিনের মেয়ে খাদিজা বেগম (১৪) ও মঞ্জিল মিয়ার মেয়ে বিউটি (১২)। অবৈধ পথে যশোরের বেনাপোল দিয়ে ৩১ জুলাই ভারতে পাচারের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর হাতে দুই কিশোরী ধরা পড়ে। পরে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এ সময় তারা বেনাপোল বন্দর পুলিশের হাতে আটক হয়। পরে কটিয়াদী থানা-পুলিশের মাধ্যমে দুই কিশোরী বেনাপোল বন্দর পুলিশের কাছ থেকে মুক্ত হয়। ওই দুই কিশোরীর কাছ থেকে পাওয়া তথে৵র ভিত্তিতে গত বুধবার বেনাপোল থেকে দেলোয়ার ও নিজ গ্রাম থেকে দোলেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দোলেনা দুই কিশোরীসহ মানব পাচারের কথা স্বীকার করে বুধবার ও দেলোয়ার গত শুক্রবার আদালতে স্বীকারোক্তি দেন।

স্বীকারোক্তিতে দেলোয়ার উল্লেখ করেন, এ পর্যন্ত তাঁরা পাঁচ কিশোরীকে ভারতে পাচার করেছেন। পাচারের জন্য জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে পান বলে জানান দেলোয়ার।

খাদিজার মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব। ঢাকায় কাজ দেওয়ার কথা বলে দেলোয়ার ও দোলেনা আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।’

ওসি জাকির রাব্বানী বলেন, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে নারী পাচার আইনে মামলা হয়েছে। বড় একটি মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে দেলোয়ার ও দোলেনার যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।