পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধারে ৪৫টি জলযান কেনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ফাইল ছবি: বাসস

বন্যায় পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার কাজে ব্যবহারের জন্য ৪৫টি জলযান কেনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন।

সিলেট, সুনামগঞ্জের মতো দেশের বন্যাকবলিত অন্য জেলায় বন্যার্তদের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী নামানো হবে বলেও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়ের নিচে যারা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন, তাদের দ্রুত পুনর্বাসনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকের সিদ্ধান্তের এসব তথ্য প্রথম আলোকে জানান ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তিনি বলেন, বন্যায় মানুষদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী ১৫টি জেমিনি বোট (বড় নৌকা অল্প পানিতে চলে) এবং ৩০টি উদ্ধার জলযান কেনার নির্দেশ দিয়েছেন।

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যায় পানিবন্দী হয়ে থাকা মানুষদের উদ্ধার করতে না পারার বড় কারণ ছিল জলযান সংকট। বন্যার কারণে অনেক নৌকার মালিক ভাড়া কয়েকগুণ বাড়িয়েছেন। ভাড়া বেশির কারণে বন্যাকবলিত মানুষদের উদ্ধার করা যায়নি। সামাজিক সংগঠন ও আত্মীয়-স্বজনেররা নৌকা নিয়ে যেতে পারেনি।

সোমবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকে সিলেট, সুনামগঞ্জে নৌকার সংকটের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। একই সঙ্গে কিছু সুযোগ সন্ধানী নৌকার মালিকের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। তখন জলযান কেনার সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে রোববার সন্ধ্যায় পানি সম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে এক ভার্চ্যুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভিন্ন জেলার ডিসি ও এসপিরা যোগ দেন। ওই ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে দেশের অন্য জেলা থেকে জলযান সংগ্রহ করে বন্যাকবলিত এলাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে বন্যাকবলিত এলাকায় চুরি ডাকাতি যাতে না হয় সেদিকে কড়া নজরদারি রাখতে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে জানানো হয়, সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পানি আরও কয়েক দিন থাকবে। পাশাপাশি নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, জামালপুরসহ অন্যান্য জেলায় বন্যা পরিস্থিত অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই ওই সব জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন পানি সম্পদ সচিব। একই সঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকায় ওএমএসের চাল পাঠানো, সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, স্থানীয় এনজিওদের কাজে লাগানোর কথাও বলেন তিনি।

জানতে চাইলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রেজাউল মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, সুনামগঞ্জ ও সিলেটে বন্যা মোকাবিলায় এরই মধ্যে তিনটি স্পিড বোট স্থানীয় প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্য জেলায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আরও ১২টি স্পিড বোট আছে। সেগুলো বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হবে। এসব স্পিড বোটে ১৫ থেকে ২০ জন উঠতে পারে।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জানানো হয়, রাজশাহী অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। সেখানে আগাম প্রস্তুতি নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাঁতার জানেন এমন ব্যক্তিদের দিয়ে দল গঠন করে দুর্গম এলাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।