পারপূগী-নেকমরদ সড়কে খানাখন্দ, দুর্ভোগে পথচারী

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পারপূগী-নেকমরদ সড়কের শীবগঞ্জ থেকে ভগদগাজী পর্যন্ত দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরে গেছে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পারপূগী-নেকমরদ সড়কের শীবগঞ্জ থেকে ভগদগাজী পর্যন্ত দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরে গেছে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো

খানাখন্দে ভরা সড়ক। কোথাও কোথাও পিচ ঢালাই উঠে পাথর ও ইটের খোয়া বেরিয়ে এসেছে। কোথাও সড়কের দুপাশ ভেঙে সংকুচিত হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পারপূগী-নেকমরদ সড়কের চার কিলোমিটার বেহাল। এতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে নর্দান বাংলাদেশ ইনটিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় এলজিইডি পারপূগী-নেকমরদ সড়কের শীবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের পশ্চিম পাশ থেকে ভগদগাজী পর্যন্ত৪ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়ক মেরামতের উদ্যোগ নিয়ে দরপত্র আহ্বান করে। প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ২৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। কাজটি পান শহরের ঠিকাদার রামবাবু। ওই বছরের ২৬ আগস্ট তাঁকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কার্যাদেশের শর্তানুযায়ী কাজটি ৩০ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদার সড়কটি সংস্কারের কাজ না করে ফেলে রেখেছেন।

১৭ নভেম্বর সরেজমিনে দেখা যায়, ওই সড়কের কোথাও কোথাও কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কের চিহ্নই উধাও। কোথাও সড়কের দুপাশ ভেঙে সংকুচিত হয়েছে। সড়ক দিয়ে যানবাহন চলছে হেলেদুলে। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সড়কটি দিয়ে সদর উপজেলার রহিমানপুর, মোহাম্মদপুর ও জামালপুর এবং রানীশংকৈলের রাতোর ও নেকমরদ ইউনিয়নের হাজারো বাসিন্দা প্রতিদিন জেলা শহরে আসা-যাওয়া করেন। সড়কের দুই মাথায় নেকমরদ, মাদারগঞ্জ ও শীবগঞ্জ হাট রয়েছে। সড়ক ভাঙা থাকায় তাঁদের উৎপাদিত পণ্য পাশের হাটবাজারে নিয়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে।

কাশীডাঙ্গ গ্রামের বাসিন্দা মফিজুল হক বলেন, ‘৮-১০ বছর ধরে সড়কটি বেহাল। এ কারণে অটোরিকশা ও রিকশা আসতে চায় না।’

সড়কটি দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন শীবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কটি অনেক দিন আগেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা না হলে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হবে না।

সড়কে চলাচলকারী রিকশাভ্যানের চালক আরশাদ আলী (৩৯) বলেন, সড়কটির খানাখন্দে পড়ে অনেক সময় ভ্যান উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়।

ভগদগাজী গ্রামের ভ্যানচালক আবদুল গফুর (৪২) বলেন, এই সড়কে ভ্যানগাড়ি চালাতে হলে অনেক শক্তি ব্যয় করতে হয়। বেঁচে থাকার তাগিদে বাধ্য হয়ে এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়।

সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল এক যুগের বেশি সময় আগে। এরপর আর হাত পড়েনি। সড়কটি দিয়ে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। তারপরও সড়কটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান সরদার বলেন, দরপত্র আহ্বানের পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ওই সড়কে জেলা পরিষদের গাছ রয়েছে। তা সরিয়ে না নেওয়ায় সড়কের পাশ সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। এ কারণে সড়ক মেরামতের কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদার। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যে সংস্কারকাজ শুরু হবে।

ঠিকাদার রামবাবু বলেন, সংকট কেটে গেলেই সড়কের কাজ শুরু হবে।