পারাবত ট্রেনে আসনবিহীন যাত্রীদের চাপে দুর্ভোগ

উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য ঢাকা-সিলেট রেলপথের আন্তনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেসে নতুন বগি লাগানো হলেও যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। আসনসংখ্যার বিপরীতে দুই-তিন গুণ আসনবিহীন টিকিট বিক্রি করায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
ট্রেনটির কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেন, গত সোমবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে পারাবত এক্সপ্রেস ঢাকার কমলাপুর থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এর ১৬টি বগিতে আসন ৯৬০টি। এ সময় যাত্রী ছিলেন এর দ্বিগুণ। ট্রেনটি যখন বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়, তখন যাত্রীসংখ্যা বেড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর তিন ভাগের দুই ভাগই ছিলেন আসনবিহীন যাত্রী। এতে পুরো ট্রেনে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়। কোথাও তিল ধারণের স্থান ছিল না। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে বগির জানালা দিয়ে ভেতরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢুকতে পারেনি। ট্রেনটি এভাবে আড়াই ঘণ্টা যাত্রার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে এসে পৌঁছায় সকাল নয়টায়। এ সময় অতিরিক্ত সব যাত্রী নেমে যাওয়ায় ট্রেনের সব বগিই ফাঁকা হয়ে যায়।
এটি পারাবত এক্সপ্রেসের এক দিনের দৃশ্য নয়, প্রতিদিনই সিলেটের যাত্রীরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও অস্বস্তি নিয়ে ঢাকা-সিলেট ও সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচল করেন।
যাত্রীরা অভিযোগ করেন, আসনের বিপরীতে অতিরিক্ত স্ট্যান্ডিং (দাঁড়ানো) টিকিট বিক্রি করার কারণে এ রুটে চলাচলকারী রেলযাত্রীদের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা এ রুটে মাঝামাঝি ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাত্রাবিরতি বন্ধের দাবি জানান।
যাত্রী সাইদুর রহমান বলেন, পারাবত এক্সপ্রেস ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাত্রাবিরতি দেওয়ায় ও অতিরিক্ত স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। ঢাকা থেকে এ ট্রেন ছাড়ার আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীরা আসনবিহীন টিকিট কেটে আসন দখল করে নেন। যে কারণে অনেক সময় তাঁদের সঙ্গে দেন-দরবার করতে হয়।
অপর যাত্রী জাহির উদ্দিন বলেন, সিলেট থেকে ঢাকাগামী পারাবত ট্রেনটি যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়, তখন একইভাবে আসনবিহীন টিকিটের দুই-তিন গুণ যাত্রী ওঠে পড়েন। এ স্টেশনের পৌঁছার আগ পর্যন্ত পুরো ট্রেনে স্বাভাবিক পরিবেশ থাকে। তাঁর দাবি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রাবিরতি বন্ধ না হলে পারাবত ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগ থেকেই যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো. আরিফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আসনবিহীন টিকিট বিক্রির বিষয়টি স্বীকৃত। তবে অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি হওয়া উচিত নয়। বিষয়টি তিনি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাত্রাবিরতির দাবির বিষয়টি উঠলে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভেবে দেখবেন।