পিন্টুর বাড়িতে যাননি বাবর, চেনেনও না: আইনজীবী

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর কখনো সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাড়িতে বৈঠক করেননি। কারণ, তিনি আবদুস সালাম পিন্টুর ধানমন্ডির সরকারি বাড়িতে কখনো যাননি। সেই বাড়িটি তিনি চেনেনও না।
লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে গিয়ে তাঁর আইনজীবী নজরুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার আদালতে এই দাবি করেন।
নজরুল ইসলাম আরও দাবি করেন, বাবর যে হাওয়া ভবনে গিয়ে বৈঠক করেছেন তা কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল কবির প্রমাণ করতে পারেননি। কারণ বাবরের গানম্যান ছিলেন, গাড়িচালক ছিলেন, হাওয়া ভবনের লোকজন ছিলেন, মামলায় তাঁদের কাউকে সাক্ষী করা হয়নি।
মঙ্গলবার ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁর আইনজীবী নজরুল ইসলাম। পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে দুপুর ১২টার দিকে আসামিপক্ষের যুক্তি গ্রহণ করেন ঢাকা দ্রুত বিচার আদালত-১-এর বিচারক শাহেদ নুর উদ্দীন।
বাবরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে নজরুল ইসলাম বলেন, মুফতি হান্নান যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে তিনি বাবরের সঙ্গে মাওলানা তাজউদ্দিনের সম্পর্ক তৈরির বেআইনি চেষ্টা করেছেন। অথচ বাবর কখনো হান্নানকে দেখেননি, চেনেনও না। হান্নান সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণাও নেই। তাই হান্নান তাঁর জবানবন্দিতে বাবরকে জড়িয়ে যেসব কথা বলেছেন, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
যুক্তিতর্কের একপর্যায়ে সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, এটা কেমন ধরনের যুক্তিতর্ক, বোধগম্য নয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তি খণ্ডন না করে ভিন্ন ও পুরোনো প্রসঙ্গে কথা বলে যাচ্ছেন।
এ পর্যায়ে বিচারক বিবাদীপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কী করা উচিত ছিল, কী করার দরকার ছিল, এসব কথা প্রাসঙ্গিক নয়। আপনাকে বলতে হবে বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি।’
দুপুর ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত যুক্তিতর্ক চলার পর আদালত আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন বিচারক শাহেদ নুর উদ্দীন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার অন্যতম আসামি লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু প্রমুখ।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে দলটির সমাবেশ চলাকালে গ্রেনেড হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নিহত হন। এ হামলায় আওয়ামী লীগের দলীয় সভাপতি ও সেই সময়ের বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ দলের কয়েক শ নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন। এই মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ আরও অনেকে।