পৃথিবীর মুনাফা গ্রহণ করতে হলে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে

গ্রামীণফোন ও প্রথম আলোর উদ্যাগে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উপলক্ষে ‘একটাই পৃথিবী’ শিরোনামে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ২ জুন ২০২২। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন অরণ্য ক্রাফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ নওশীন খায়ের।

এম এ নওশীন খায়ের

নওশীন খায়ের তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে শিল্পায়ন হচ্ছে। আর সে জন্য অনেক কার্বন নিঃসরিত হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধতা খুব জরুরি। আমাদের পরিবেশের গাছ কাটা হচ্ছে, বন উজাড় করা হচ্ছে। আমাদের বন যেন ধ্বংস না হয়, গাছপালা যেন না কাটা হয়, সে বিষয়ে কাজ করা প্রয়োজন। ‘আমাদের অরণ্য’ একটি ছোট প্রতিষ্ঠান। ১৯৮০ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সহযোগিতায় এ প্রতিষ্ঠান গবেষণা শুরু করে। তখন যেখানে–সেখানে পোশাকশিল্পের কারখানা গড়ে উঠছিল। শিল্পের ওপর তেমন নিয়ন্ত্রণ ছিল না।

নদীতে ব্যাপকভাবে বর্জ্য পড়ছিল। বিশেষ করে নীল বিপ্লবের পরে ন্যাচারাল ডাই প্রসেসটা এ অঞ্চলে ছিল না। দেশীয় ন্যাচারাল ডাই প্ল্যান্টের জন্য বন মন্ত্রণালয় থেকে একটি নীতিমালা করার ক্ষেত্রে আমরা কাজ করেছিলাম। কিন্তু এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব চলছে। অনেক কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে। তবে আমাদের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান পরিবেশ রক্ষায় যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেটি নিতে পারেনি। আমাদের জীবন ও পরিবেশের অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ রক্ষায় এত ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে যে কতটুকু পরিবেশ রক্ষা করা যাবে, সেটি বড় প্রশ্ন।

ক্ষুদ্র শিল্প অনেক সমস্যা মোকাবিলা করছে। তাদের সম্পদের অভাব, সঠিক তথ্যের অভাব, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অভাব। ক্ষুদ্র শিল্প কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে, তার কোনো তথ্যও নেই যে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। পৃথিবীর মুনাফা গ্রহণ করতে হলে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। সম্পদ ও উৎপাদনের পুনর্বণ্টন করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান।

এম এ নওশীন খায়ের: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অরণ্য ক্রাফট