প্রতিটি বিবাহবিচ্ছেদে সন্তানেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়

প্রতিটি বিবাহবিচ্ছেদে সন্তানেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়—তাদের সবার অনুভূতি একই রকম হয় বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের কারণে সন্তানদের যে মানসিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, সেই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ আজ বুধবার এ মন্তব্য করেন।

বিবাহবিচ্ছেদের কারণে বাবার হেফাজতে থাকা সন্তানদের নিজ হেফাজতে নিতে মায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৯ মে হাইকোর্ট এক রুল দেন। দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়। এ অনুসারে গত ২৫ জুন মাগুরা জেলা পুলিশ দুই শিশুকে আদালতে হাজির করে। প্রায় ১৩ মাস পর সেদিন মাকে দেখে দুই শিশু। মা-ও দেখেন দুই সন্তানকে। দীর্ঘদিন পর এই পুনর্মিলনে মা ও দুই ছেলের কান্নায় আদালতকক্ষের পরিবেশ হয়ে ওঠে আবেগঘন। আদালতে বড় ছেলে মা-বাবাকে একত্রে দেখতে চাওয়ার ইচ্ছার কথা জানায়।

ওই বক্তব্যের পর আদালত খাসকামরায় দুই শিশু এবং তাদের মা-বাবার বক্তব্য শোনেন। পরে আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, শিশু দুটি আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে। তবে এই সময়ে তাদের বাবা যেকোনো সময় তাদের দেখাশোনা করার সুযোগ পাবেন। ৪ জুলাই পরবর্তী আদেশের দিন রেখে সেদিন শিশু দুটিকে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

আইনজীবী সূত্র বলেছে, স্ত্রী বেসরকারি কলেজের শিক্ষক এবং স্বামী বেসরকারি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা। ২০০২ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। স্ত্রীর বাড়ি রাজশাহীতে আর স্বামীর বাড়ি মাগুরায়। দাম্পত্য জীবনে মনোমালিন্যের জেরে দুই সন্তানকে মাগুরায় পাঠানোর এক সপ্তাহ পর গত বছরের ১২ মে ওই ব্যক্তি স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠান। ছোট ছেলের বয়স নয় বছর। এরপর আর সন্তানদের দেখা পাননি মা।

আজ আদালতে ওই দুই শিশুর বাবার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। আর মায়ের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।

পরে রুহুল কুদ্দুস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে আদালতে বাবা-মাসহ বাচ্চা দুটি উপস্থিত ছিল। আদালত আমাদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন তাদের দুজনের পারিবারিক ও দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি কত দূর। আমরা বলেছি যে আর একটু সময় যদি আপনারা দেন, তাহলে আমি সন্তানের মায়ের পক্ষ থেকে বলেছি, মা ইতিবাচক আছেন। বাবার পক্ষ থেকে তাঁর আইনজীবীও বলেছেন, সন্তানের ভালোর জন্য তিনি মেনে নেবেন। আমাদের এ বক্তব্য আদালত শুনে আগামী ১ আগস্ট পরবর্তী তারিখ রেখেছেন।’