প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা খুদে শিক্ষার্থী শীর্ষেন্দু সংবর্ধিত

প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা খুদে শিক্ষার্থী শীর্ষেন্দুকে সংবর্ধনা ক্রেস্ট হাতে তুলে দেন ঝালকাঠি-২ আসনের সাংসদ বি এইচ হারুন। গতকাল কাঁঠালিয়ার আওড়াবুনিয়া বিদ্যালয় মাঠ থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো
প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা খুদে শিক্ষার্থী শীর্ষেন্দুকে সংবর্ধনা ক্রেস্ট হাতে তুলে দেন ঝালকাঠি-২ আসনের সাংসদ বি এইচ হারুন। গতকাল কাঁঠালিয়ার আওড়াবুনিয়া বিদ্যালয় মাঠ থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

পায়রা নদীতে সেতু নির্মাণের অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা পটুয়াখালীর খুদে শিক্ষার্থী শীর্ষেন্দু বিশ্বাসকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আওড়াবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এই সংবর্ধনা দেয়।
শীর্ষেন্দুর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঝালকাঠী-১ (কাঁঠালিয়া-রাজাপুর) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ বি এইচ হারুন। শীর্ষেন্দুর গ্রামের বাড়ি এই আওড়াবুনিয়া গ্রামে। তার মা-বাবা চাকরিসূত্রে পটুয়াখালী সদরে বসবাস করেন।
গতকাল শনিবার বেলা একটার দিকে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আওড়াবুনিয়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আওড়াবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাঁঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া, ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের শিল্পবিষয়ক সম্পাদক মুজিবুল হক, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান প্রমুখ।
২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলায় পায়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি লেখে। পরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই চিঠির জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী ওই চিঠির জবাবে বলেন, শীর্ষেন্দুর চিঠি পেয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। নৌকায় নদী পার হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে ছেলেটির উদ্বেগের প্রশংসা করেন তিনি।
গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর লেখা প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি ২০ সেপ্টেম্বর শীর্ষেন্দুর বিদ্যালয়ে পৌঁছায়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে শীর্ষেন্দু লিখে, ‘আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমার বাবার নাম বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং মায়ের নাম শীলা রাণী সন্নামত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর শৈশবকাল নিয়ে রচনা লিখে আমি তৃতীয় স্থান অর্জন করি।’ শীর্ষেন্দু আরও লিখে, ‘আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। আমাদের গ্রামের বাড়ি যেতে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদী পার হয়ে যেতে হয়। ওই নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ…কখনো নৌকা ডুবে যায়, কখনো কখনো ট্রলার ডুবে যায়। এসব দুর্ঘটনায় অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। আমি আমার বাবা-মাকে হারাতে চাই না। কারণ আমি তাঁদের খুব ভালোবাসি। তাই আমাদের জন্য মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে একটি সেতু তৈরির ব্যবস্থা করুন।’
শীর্ষেন্দু তার মা-বাবার একমাত্র সন্তান। তার বাবা পটুয়াখালী শহরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং তার মা সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে চাকরি করেন। পটুয়াখালী শহরের পুরান বাজার এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তাঁরা।
গতকাল সংবর্ধনা পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় শীর্ষেন্দুর মা শীলা রাণী সন্নামত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলের লেখা চিঠিতে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পায়রা নদীতে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন এবং সে জন্য শীর্ষেন্দুকে আজ সংবর্ধিত করায় আমরা খুব আনন্দিত।’