বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস

ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইট উদ্বোধনের ৯ সপ্তাহ পর এসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস জানাচ্ছে, ২৮ জুন কানাডার টরন্টোয় ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে। গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নতুন এই তারিখের কথা জানান।

এর আগে গত ২৬ মার্চ আগাম ঘোষণা দিয়ে টরন্টো ফ্লাইট উদ্বোধন করেছিল বিমান। কিন্তু প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন না করেই ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দেয়। ফলে উদ্বোধনী ফ্লাইটকে ‘পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক ফ্লাইট’ আখ্যা দিয়ে একটি ফ্লাইট ওই দিন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে টরন্টো পাঠানো হয়। ওই ফ্লাইটের পেছনে খরচ হয়েছিল প্রায় চার কোটি টাকা।


বিমান সূত্রে জানা গেছে, ফ্লাইট চালুর নতুন তারিখ ঘোষণা করলেও এখন পর্যন্ত ফ্লাইট চালুর সব প্রস্তুতি শেষ হয়নি। এ ছাড়া বিমান কর্তৃপক্ষ আগে জানিয়েছিল, ঢাকা থেকে টরন্টোতে সরাসরি ফ্লাইট যাবে। উদ্বোধনী ফ্লাইটের পর জানানো হয়, মাঝে একটি বিরতি বা স্টপওভার নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, প্রথমে ঠিক হয় যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে বিরতি নেওয়া হবে। পরে ঠিক হয় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বিরতি নেওয়া হবে। ঢাকায় ফেরার পথে অবশ্য কোনো বিরতি নেই। ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দেওয়া হলেও টরন্টোতে যাত্রী ও কার্গো—এ দুটির জন্য জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়োগ এখনো দিতে পারেনি বিমান।

গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিমানের এমডি আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, বিমান ২৮ জুনেই যাবে। যদি সময় একটু বেশি লাগে, তাহলে তারিখটা হয়তো একটু পেছাবে। তিনি বলেন, ‘টিকিট বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। কারণ, বিলিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্ল্যানিংয়ের সঙ্গে ট্রাভেল এজেন্সির একটা সম্পর্ক আছে। এ সমন্বয়ের জন্য যে বিজনেস লাইসেন্স লাগে, সেটি এখনো পাইনি। এসব না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। কেবল ওয়েবসাইটের টিকিট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ট্রেনিং সেন্টারে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বিমানের এমডি জানান, যত দিন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলবে, তত দিন ইস্তাম্বুল হয়ে টরন্টো যেতে হবে। অবস্থার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে।

দুদকের তদন্ত প্রসঙ্গে

২০১৪ সালের ১১ মার্চ ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি উড়োজাহাজ ভাড়া নিয়েছিল বিমান। ত্রুটিপূর্ণ ওই দুটি উড়োজাহাজ ভাড়ায় অনিয়ম হয়েছে, এর ফলে বিমানের বড় অঙ্কের লোকসান হয় বলে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় খবর বের হয়। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল গতকাল বিমানের বলাকা ভবনে তদন্ত করতে আসে।
এ বিষয়ে বিমানের এমডি সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি সংসদীয় কমিটিতে ছিল। তারা সেটি দুদককে পাঠিয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের দল এসেছে। দুদক যেন নির্বিঘ্নে কাজ শেষ করতে পারে, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মিসর থেকে ভাড়া করা ওই দুটি উড়োজাহাজের কারণে বিমানের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে, এ ক্ষেত্রে বিমান কী পদক্ষেপ নিয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে সভায় বিমানের পরিচালক (পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ) এয়ার কমোডর মো. মাহবুব জাহান খান বলেন, বিমান এখান থেকে শিক্ষা নিয়েছে। এটা সবচেয়ে বড় কথা। এ ঘটনার পর বিমানের একটি লিজ গাইডলাইন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ গাইডলাইন মানা হবে।