ফেসবুকে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৩

ফেসবুকে গত ডিসেম্বরে পরিচয়, তারপর বন্ধুত্ব। বন্ধু বিদেশি। এর মধ্যেই একদিন খবর এল স্কটল্যান্ড থেকে বন্ধু মূল্যবান সব উপহার পাঠিয়েছেন। উপহার ছাড় করাতে কিছু টাকা দিতে হবে। বাংলাদেশি বন্ধু টাকা দিলেন কিন্তু উপহার আর এল না। অবশেষে র্যাবের শরণাপন্ন হন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সেই প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। তবে টাকা আর উদ্ধার হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার র্যাব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানায়। প্রতারিত ব্যক্তি ১৫ মার্চ র্যাব-২ তে অভিযোগ করেন। গতকাল বেলা তিনটায় জেনেভা ক্যাম্পের পশ্চিম ফটকের সামনে থেকে প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মো. আফজাল আহম্মেদ, মো. শরীফ আলমগীর এবং শরীফুল আহম্মেদ ওরফে মোহন।
র্যাব-২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাব উদ্দীন বলেন, টাকাটা ব্যাংক চেকের মাধ্যমে বিনিময় হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এখনো চেষ্টা চলছে।
র্যাব সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রতারিত ওই ব্যক্তির সঙ্গে গত বছরের ডিসেম্বরে ফেসবুকে থম্পসন স্মিথ নামে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে স্কটল্যান্ডের নাগরিক বলে পরিচয় দেন। একপর্যায়ে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে বাংলাদেশি বন্ধুর সঙ্গে কথাও বলেন। ১২ মার্চ ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঢাকার মিন-রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল থেকে এক ব্যক্তি যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, স্কটল্যান্ড থেকে কিছু উপহারসামগ্রী এসেছে। ওই উপহার নিতে তাঁকে ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। পরদিন উপহার নিতে ওই ব্যক্তি ৪০ হাজার টাকার একটি চেক একটি ব্যাংক হিসাবে জমা দেন।
ওই দিনই অল্প সময়ের ব্যবধানে মিন-রো ট্রেড থেকে দুবার ফোন আসে। প্রথমে ৯৭ হাজার ৯৯৯ টাকা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। পরে বলা হয় অ্যান্টি-টেররিজম অ্যান্ড মানি লন্ডারিং সার্টিফিকেটের জন্য আরও ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৭০০ টাকা লাগবে। তিনি চেকে ওই টাকা শোধ করেন। তিনি ১৩ ও ১৪ মার্চ সব টাকাই জমা দেন। পরদিন একই নম্বর থেকে আরও ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫০ টাকা দাবি করা হয়। তখন ওই ব্যক্তি উপহারের বাক্সটি ঠিক কোথায় আছে জানতে চান। মিন-রো ট্রেড থেকে জানানো হয়, উপহারের বাক্স সম্পর্কে পরে জানানো হবে।
র্যাব-২ অভিযোগ পেয়ে সপ্তাহখানেক সময় নেয়। দলটি প্রথমে প্রতারকদের অবস্থান নিশ্চিত করে। পরে গতকাল বিকেলে প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাদের দলে এ দেশে আরও পাঁচ-সাতজন আছে। দেশে-বিদেশে তাদের নেটওয়ার্ক আছে। ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোতে তাদের দলের লোকজন নিজেদের আমেরিকা, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড
অথবা ইউরোপের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেয় এবং টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয়।