বনজ সম্পদ রক্ষা না পেলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে

ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার, অধিক জনসংখ্যার চাপ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বন উজাড় হচ্ছে। বনজ সম্পদ রক্ষা করা না হলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটবে, যার প্রভাব পড়বে প্রকৃতিতে। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা করতে বন উজাড় ও বনের অবক্ষয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বরিশালে এক পরামর্শ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
নগরের গ্র্যান্ড পার্ক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ‘বন উজাড় ও বনের অবক্ষয়ের কারণ অনুসন্ধান’ বিষয়ক পরামর্শ কর্মশালাটির আয়োজন করে ইউএন রেড বাংলাদেশ জাতীয় কর্মসূচি। এতে সহযোগিতা করেছে সামাজিক বন বিভাগ, বরিশাল। কর্মশালার শুরুতে ইউএন রেডের গভর্ন্যান্স কো-অর্ডিনেটর সাঈদ মাহমুদ রিয়াদ বনজ সম্পদের গুরুত্ব এবং পরিবেশের ওপর এর প্রভাব বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। পরে গবেষণাপদ্ধতি নিয়ে কথা বলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল অঞ্চলের বন সংরক্ষক আবু নাছের খান।
বক্তারা বলেন, নানা কারণে দেশের বন উজাড় হচ্ছে। এর মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, যথেচ্ছভাবে বন ধ্বংস করে বাড়িঘর নির্মাণ, ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো বন্ধ না হওয়া অন্যতম। বনজ সম্পদকে মূল্যায়ন না করার কারণে প্রাকৃতিক ও সৃজিত বন দিন দিন উজাড় হচ্ছে। এ ছাড়া গাছ কাটার নীতিমালা অনুসরণ না করার ফলেও বনজ সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। কোন গাছ কখন কাটা যাবে, গাছ কাটার পর কত গাছ লাগানো দরকার, সে ব্যাপারে সাধারণ মানুষের ধারণা নেই। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
তাঁরা আরও বলেন, দেশে ফলদ গাছ কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে দেশি পাখির ওপর। পাখির অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া কমে যাচ্ছে মাটির উর্বরতা। সব মিলিয়ে পরিবেশের ওপর আঘাত পড়ছে। গাছ ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে আমাদের রক্ষা করে, অক্সিজেন সরবরাহ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। তাই সবার আগে বনজ সম্পদ রক্ষা করতে হবে।
কর্মশালায় বক্তব্য দেন বরিশালের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা আক্কাস হোসেন, সমন্বয় পরিষদের সভাপতি এস এম ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আহসান হাবিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক হাসানুর রহমান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আলমগীর হোসেন, পটুয়াখালী জেলার বন কর্মকর্তা অজিত কুমার রুদ্র প্রমুখ।