বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে ইসরায়েলের গণমাধ্যমে খবর

বাংলাদেশের নতুন ই–পাসপোর্ট থেকে ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ অংশটি বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে দেশে আলোচনা–সমালোচনা চলছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, ইসরায়েলের গণমাধ্যমেও বিষয়টি এসেছে। এ বিষয়ে রোববার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের পত্রিকা দ্য জেরুজালেম পোস্ট। তাতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ইসরায়েলের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গিলাদ কোহেন ।’

দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্কও নেই। শুরু থেকে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশের পুরোনো পাসপোর্টে ‘‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ একসেপ্ট ইসরায়েল’’ লেখা থাকত। ছয় মাস আগে বাংলাদেশের নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করার পর ‘‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ একসেপ্ট ইসরায়েল’’ থেকে ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ অংশটি বাদ দেওয়া গেছে। এ বিষয়টিই মূলত আলোচনায় এসেছে।

জেরুজালেম পোস্টের খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল বাংলাদেশ’। খবরে বলা হয়েছে, অতীতে কোনো বাংলাদেশি ইসরায়েল ভ্রমণ করলে কিংবা করতে চাইলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতো বা তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হতো কিংবা এমন ভয় দেখানো হতো। জেরুজালেম পোস্ট তাদের খবরের সঙ্গে গিলাদ কোহেনের টুইট বার্তার বিষয়টি উল্লেখ করেছে।

আরও পড়ুন

কোহেন এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘গ্রেট নিউজ! বাংলাদেশে ইসরায়েলের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এটি একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ এবং আমি ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে আমাদের দুদেশের মানুষই উপকৃত হতে পারে ও উন্নতি করতে পারে।’

বাংলাদেশের পাসপোর্ট

তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার সকালে এক প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি শোনার পর আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করি। ওনার‌ কাছে জেনেছি, ছয় মাস আগে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করার পর ‘‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ একসেপ্ট ইসরায়েল’’ থেকে ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ অংশটি বাদ গেছে।এই পরিবর্তন করা হয়েছে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মানের স্বার্থে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, নতুন ই–পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েলের নাম বাদ দেওয়া হলেও দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীতিগত কোনো পরিবর্তন হয়নি, পররাষ্ট্রনীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। কারণ, বাংলাদেশ এখনো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় না।

একই বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের সমর্থন অটুট আছে।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রেখেছে সরকার। ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ আছে এবং ইসরায়েলের প্রতি বাংলাদেশের অবস্থান বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করেনি। ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা করছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্র নীতির প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।