বাংলাদেশ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী জোগানে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ

জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সড়ক নির্মাণেও কাজ করেন সেনারা। ছবি: সংগৃহীত।
জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সড়ক নির্মাণেও কাজ করেন সেনারা। ছবি: সংগৃহীত।
>
  • জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী জোগানে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ।
  • ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০টি পৃথক মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করছেন।
  • ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম শুরু হয়।
  • বিশ্ব শান্তির অন্বেষণে বাংলাদেশের ১৩২ জন শান্তিরক্ষী প্রাণ দিয়েছেন।

জাতিসংঘের উদ্যোগে বিশ্বের শান্তি রক্ষার উদ্যোগে তিন দশকে বাংলাদেশের অবদান অনন্য হয়ে উঠেছে। শান্তি রক্ষায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ শক্তিশালী দেশ হিসেবে সম্মানের চোখে দেখা হয়। ইউনাইটেড নেশনস নিউজ সেন্টারে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে শান্তি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সাফল্য ও সংলগ্নতা তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী নানা জাতি-গোষ্ঠী থেকে আসা। ভিন্ন সংস্কৃতি আর ভাষার এসব শান্তিরক্ষীর একমাত্র লক্ষ্য থাকে ঝুঁকিপূর্ণ মানবগোষ্ঠীকে রক্ষা করা। সহিংসতা থেকে শান্তির পথে আসা দেশগুলোকে সহযোগিতা করা। জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী জোগানদাতা দেশ। বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী জোগানে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ বলে জাতিসংঘের দেওয়া সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরানের মধ্যে সশস্ত্র সহিংসতা বন্ধে নিয়োজিত হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম শুরু হয়। গত তিন দশকে যেসব দেশে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছেন, কর্ম আর দক্ষতায় তা অনন্য হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নারী সদস্যরাও কাজ করছেন। ছবি: সংগৃহীত।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নারী সদস্যরাও কাজ করছেন। ছবি: সংগৃহীত।

জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০টি পৃথক মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করছেন। মোট ৭ হাজার ২৪৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মধ্যে সেনা ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তি মিশনের নীল পতাকা হাতে আর নীল হেলমেট পরে মিশনগুলোয় নানা কাজে নিয়োজিত আছেন এসব শান্তিরক্ষী। নিরাপত্তা প্রদান থেকে শুরু করে সড়ক নির্মাণ, সহিংস দেশগুলোর সরকার ও জনগণকে সহযোগিতা করার নিরলস কাজের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা সুনাম অর্জন করেছেন।

হাইতির শান্তি মিশন বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়েছিল। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত এ শান্তি মিশন ভূমিকম্পবিধ্বস্ত হাইতির পুনর্গঠনকাজ এবং দেশটির বিরাজমান সহিংসতার মধ্যে সাফল্যের সঙ্গে মিশন সমাপ্ত করে।

বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকায় শান্তি রক্ষার কাজে নিয়োজিত থেকেছেন। সেন্ট্রাল আফ্রিকার দেশগুলো, কঙ্গো, সুদানের দাফুরসহ কঙ্গোর বুনিয়া, ইটুরি প্রদেশে কাজ করেছেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা।

বিশ্ব শান্তির অন্বেষণে বাংলাদেশের ১৩২ জন শান্তিরক্ষী প্রাণ দিয়েছেন। বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের এ আত্মত্যাগ এক গর্বের এবং অহংকারের উপাখ্যান।