বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ভরে গেছে নিকুঞ্জ-২

নিকুঞ্জ-২ আব​াসিক এলাকার অনেক ভবনমালিক বাড়ির সামনে অবৈধভাবে এ রকম র‍্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার ঢালু পথ) নির্মাণ করেছেন। এতে সড়কগুলো সংকুচিত হয়ে গেছে l প্রথম আলো
নিকুঞ্জ-২ আব​াসিক এলাকার অনেক ভবনমালিক বাড়ির সামনে অবৈধভাবে এ রকম র‍্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার ঢালু পথ) নির্মাণ করেছেন। এতে সড়কগুলো সংকুচিত হয়ে গেছে l প্রথম আলো

অসংখ্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার ভেতর। অনেক আবাসিক ভবন কারখানা, বিপণিবিতান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বেশির ভাগ ভবনমালিক বাড়ির সামনে অবৈধভাবে র্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার ঢালু পথ) নির্মাণ করায় এলাকার সড়কগুলো সংকুচিত হয়ে গেছে। এদিকে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কগুলো হাঁটুপানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নিকুঞ্জবাসীকে।
গতকাল শনিবার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকা পরিণত হয়েছে বাণিজ্যিক এলাকায়। কোনটা আবাসিক আর কোনটা বাণিজ্যিক ভবন, তা বুঝে ওঠা কঠিন। কোথাও আবাসিক ভবনের নিচতলা কারখানা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কোনো ভবনের কয়েক তলাজুড়ে বানানো হয়েছে বিপণিবিতান। আর ওপরের তলাগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে বসতবাড়ি হিসেবে।
নিকুঞ্জ-২ ক্লাবের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী শহীদ উদ্দিন বলেন, আবাসিক এলাকার তুলনায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বেশি হয়ে গেছে। অনুমতি ছাড়াই রাসায়নিকের দোকান, গার্মেন্টস সামগ্রীর দোকান গড়ে উঠেছে। এসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কারণে রাতে-দিনে ট্রাকের আনাগোনায় এলাকাবাসী বিরক্ত।
নিকুঞ্জ-২ এলাকায় প্লট আছে ৮ শতাধিক, সড়ক ২১টি। অধিকাংশ প্লটেই ভবন নির্মিত হয়েছে। গতকাল দেখা যায়, ভবনমালিকেরা নিজেদের সুবিধার্থে সড়কের বেশ কিছু জায়গা নিয়ে র্যাম্প নির্মাণ করেছেন। র্যাম্পের দুই পাশে গাছ লাগিয়েছেন। সড়কের দুই পাশের ভবনের র্যাম্পের কারণে একদিকে সড়ক সংকুচিত হয়ে গেছে, অন্যদিকে পানিনিষ্কাশনের নালাও সিমেন্টের নিচে ঢাকা পড়েছে। এই মাসের শুরুতে নিকুঞ্জ-২ এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত অর্ধশতাধিক র্যাম্প ভেঙে দেন। তবে এখনো কয়েক শ বাড়ির সামনে এমন র্যাম্প রয়ে গেছে।
নিকুঞ্জ-২ এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সামান্য বৃষ্টিতেই এলাকার রাস্তাঘাট হাঁটুপানিতে ডুবে যায়। চার-পাঁচ ঘণ্টায়ও এই বৃষ্টির পানি সরে না। এই এলাকার বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের সংযোগ ছিল নিকুঞ্জ-১ এলাকার লেকের সঙ্গে। নিকুঞ্জ-১ এলাকায় লেকের সঙ্গে পানিনিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে রাখায় এই জলাবদ্ধতা।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, নিকুঞ্জ-২ এলাকার পানি লেকে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ছিল। এ বছর ডিএনসিসির পক্ষ থেকে নিকুঞ্জ-১ ফটকের সামনে লেকের সঙ্গে পানির লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন নিকুঞ্জ-২-এর পানি নেমে যাচ্ছে।
নিকুঞ্জ-২ এলাকায় আছে একটি খেলার মাঠ ও একটি পার্ক। কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশেই অবস্থিত পার্কটি বেশ সাজানো-গোছানো। হাজারের ওপরে গাছ থাকায় চারপাশে সবুজের সন্নিবেশ। পার্কের চারপাশ ও মাঝ বরাবর হাঁটাপথ। সকাল ও বিকেল—দুই বেলা এলাকার বাসিন্দারা পার্কে হাঁটতে আসে।
নিকুঞ্জ-২ এলাকার প্রতিটি সড়কের মুখে লোহার ফটক। ২৫ জন নিজস্ব নিরাপত্তাপ্রহরী দায়িত্ব পালন করেন। আগের তুলনায় এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালো হয়েছে। তবে সড়কগুলোর পাশের খালি প্লটগুলোতে অবৈধ দোকানপাট, চায়ের দোকান গড়ে উঠেছে। নিকুঞ্জ-২ এলাকার বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা ময়লা আগে সড়কের ওপরে ফেলা হতো। বাসাবাড়ির ময়লা অস্থায়ীভাবে রাখার জন্য ১৯ নম্বর সড়কে ডিএনসিসি একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন বানানোয় সড়ক থেকে ময়লা সরেছে।