বার্মিজ মার্কেটের ২৪৮ দোকান বন্ধ

ক্রেতাশূন্য কক্সবাজারের বার্মিজ মার্কেট l প্রথম আলো
ক্রেতাশূন্য কক্সবাজারের বার্মিজ মার্কেট l প্রথম আলো

টানা অবরোধে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী বার্মিজ মার্কেটের ৩০৬টি দোকানের মধ্যে ২৪৮টি বন্ধ হয়ে গেছে। এসব দোকানের বেচাকেনা পর্যটকনির্ভর।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে শহরের টেকপাড়া বার্মিজ মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকান বন্ধ। কিছু দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই। রাখাইন তরুণীরা দোকানের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছেন।
মমু স্টোরের কর্মচারী রাখাইন তরুণী মা চিং বলেন, ‘সকাল ১০টায় দোকান খুলেছি, বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এক টাকাও বিক্রি হয়নি। আগের দিন বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা। এ রকম খারাপ পরিস্থিতি আগে হয়নি।’
আরেক দোকানের কর্মচারী আ চে মে রাখাইন জানান, পর্যটনের এই ভর মৌসুমে বিক্রির জন্য দোকানে সাত লাখ টাকার মালামাল মজুত করা হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে দৈনিক ৩০-৪০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এখন দিনে ১০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। এ কারণে দোকানটির দুই কর্মচারীকে ছাঁটাই করেন মালিক।
কক্সবাজার বার্মিজ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি অং ছিন রাখাইন জানান, রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজার পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ায় বার্মিজ মার্কেটও ফাঁকা। প্রায় আড়াই শ দোকান বন্ধ হওয়ায় অন্তত চার শ তরুণ-তরুণী চাকির হারিয়ে বেকার জীবন কাটাচ্ছেন। হরতাল-অবরোধ অব্যাহত থাকলে অন্য দোকানগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে।
জানা গেছে, তিন শতাধিক দোকানে কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ৮০০ জন। এর অর্ধেকই তরুণী। দোকান বন্ধ থাকায় তিন শতাধিক কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। অন্যদের জীবিকাও হুমকির মুখে পড়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন রাখাইন তরুণী জানান, তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার মাসিক বেতনে তাঁরা দোকানে চাকরি করছেন। থাকা-খাওয়া মালিকপক্ষ বহন করে। কিন্তু বেতন না পাওয়ায় তাঁরা পরিবার নিয়ে চলতে পারছেন না।
বার্মিজ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ আহমদ জানান, হরতাল-অবরোধের কারণে প্রতিদিন ৩০৬টি দোকানের ক্ষতি হচ্ছে ২৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে গত ২৪ দিনের অবরোধে ক্ষতি ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। রাখাইন ও পাহাড়ি আদিবাসীদের তৈরি কাপড়, ঘর সাজানোর পণ্য, আচার, কুটিরশিল্প, বাদামসহ নানা আসবাব বার্মিজ মার্কেটে বিক্রি হয়।