বাড়ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ভারতে রপ্তানি মূল্যবৃদ্ধি ও খাতুনগঞ্জে জলাবদ্ধতার কারণে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার প্রভাবে দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কমপক্ষে আট টাকা।

পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৮ থেকে ৪২ টাকায়। খুচরায় দীর্ঘদিন ধরে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ২৫ থেকে ২৮ টাকার মধ্যে ওঠা-নামা করছিল।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়ার বাজারের ‘মেসার্স বাছা মিঞা সওদাগর’ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রামের পেঁয়াজের বাজার ভারত থেকে আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ভারতে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অঞ্চলে বন্যায় ফসলহানির কারণে রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। মূলত এই কারণে দাম বেড়েছে। আগে যেখানে কেজিপ্রতি রপ্তানি মূল্য ছয় রুপি ছিল এখন সেখানে ২০-২২ রুপি দাম হাঁকা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল ছিল। এ বছরের প্রথম ছয় মাস পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা। গত মাসের শেষে তা সর্বোচ্চ ২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। তবে এখন তা বেড়ে সবচেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল বিকেলে নগরের কাজীর দেউড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বড় আড়ত হামিদুল্লাহ মিয়ার বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এবার বর্ষা মৌসুমে পেঁয়াজের আড়তে কয়েক দফায় পানি ঢুকে। এতে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ নষ্ট হয়। নতুন করে জলাবদ্ধতা হতে পারে এমন আশঙ্কায় পণ্যটির সরবরাহও কমে গেছে। এর ফলে গত মাসের শেষে সরবরাহ-সংকটে পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়ে যায়।

খাতুনগঞ্জের সোনালি ট্রেডার্সের কর্ণধার আবসার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে দাম বাড়ার কারণে খাতুনগঞ্জেও দাম বেড়েছে। এখানে দেশীয় পেঁয়াজের চাহিদা কম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজের চাহিদার অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ আমদানি করে মেটানো হয়। দেশে এখন পেঁয়াজের উৎপাদন হয় ২২ লাখ টন। গত বছর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয় সাড়ে আট লাখ টন।