বিনা বিচারে দেড় দশক ধরে বন্দী তিনজনের জামিন

বিনা বিচারে দেড় দশক ধরে তাঁরা কারাগারে বন্দী। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে জামিন পেলেন তাঁরা। গতকাল জামিন পাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে (বাঁ থেকে) তিনজন l ছবি: প্রথম আলো
বিনা বিচারে দেড় দশক ধরে তাঁরা কারাগারে বন্দী। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে জামিন পেলেন তাঁরা। গতকাল জামিন পাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে (বাঁ থেকে) তিনজন l ছবি: প্রথম আলো

পৃথক তিনটি হত্যা মামলায় বিনা বিচারে প্রায় দেড় দশক ধরে কারাগারে থাকা তিন আসামিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে তিনটি মামলা নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন আসামি হলেন মকবুল, সেন্টু ও বিল্লাল হোসেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থাকায় অন্য এক হত্যা মামলায় দেড় দশক ধরে বন্দী চান মিয়াকে জামিন না দিয়ে মামলাটি ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
গতকাল রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁদের জামিনের প্রশ্নে রুল শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
চান মিয়া, মকবুল ও সেন্টু এবং বিল্লাহ হোসেন দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন, এ বিষয়ে গত ১৬ নভেম্বর বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রচারিত হয়। সেদিন ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা ও কুমার দেবুল দে। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের জামিন প্রশ্নে রুল দেন, নথি তলব করেন এবং চার আসামিকে ৪ ডিসেম্বর আদালতে সশরীরে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এর ধারাবাহিকতায় গতকাল ওই চার আসামিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে হাইকোর্টে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। আদালত চারজনের বক্তব্য শোনেন। প্রতিবেদন নজরে আনা দুই আইনজীবী ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শহীদুল ইসলাম খান শুনানিতে অংশ নেন। পরে আদালত আদেশ দেন।
চারজন পর্যায়ক্রমে দাঁড়িয়ে আদালতের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। আদালত জানতে চান, কত দিন ধরে কারাগারে আছেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কি না, জামিন চাওয়া হয়েছিল কি না, কী অভিযোগ ও সহ-আসামি কারা? চারজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি বলে জানান। আদালতের নথিতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থাকায় একজনের ক্ষেত্রে রুল নিষ্পত্তি করেন এবং তিনজনের ক্ষেত্রে রুল যথাযথ ঘোষণা করে আদেশ দেন আদালত।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর শ্যামপুর থানার ২০০১ সালে হওয়া একটি হত্যা মামলায় ১৯৯৯ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে চান মিয়া কারাগারে আছেন। রাজধানীর উত্তরা থানায় হওয়া একটি হত্যা মামলায় ২০০০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন মাদারীপুরের মকবুল হোসেন। মতিঝিল থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সেন্টু ওরফে কামাল ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে কারাগারে আছেন। আর তেজগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় ২০০২ সালের ২১ নভেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বিল্লাল।