বিলুপ্ত ছিটমহল এখন বদলে যাওয়া জনপদ

১৬২টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে আয়তন ও লোকসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় দাশিয়ারছড়া। উন্নয়নের ছোঁয়ায় এই জনপদ আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছে।

বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার পাকা রাস্তাগুলোর দুই পাশ ছেয়ে গেছে বাসকগাছে। এসব বাসকপাতা বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন নারীরা।ছবি: প্রথম আলো

সাতচল্লিশের দেশভাগের বছর আলাউদ্দিন মিয়ার জন্ম। বেড়ে উঠেছেন ছিটমহলে। দেশহীন, নাগরিকত্বহীন জীবন থেকে মুক্তি পেতে আলাউদ্দিন মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন ১৯৭১ সালে। দেশ মুক্ত হয়েছে। তাঁর মতো ছিটমহলবাসীর মুক্তি মেলেনি। বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালে কাঙ্ক্ষিত মুক্তি যখন মিলল, তত দিনে কেটে গেছে অবরুদ্ধ জীবনের ৭৩ বছর।

২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হন ভারতের ১১১টি ছিটমহলের নাগরিকেরা। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হন বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের বাসিন্দারা। আজ ১ আগস্ট। ছিটমহল বিনিময়ের ৬ বছর পূর্ণ হলো।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা থেকে চার কিলোমিটার পূর্ব দিকে এগোলেই বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়ার কালীরহাটে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মিয়ার পৈতৃক বাড়ি। গত ২৩ জুলাই বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়েই তাঁর সঙ্গে কথা হয়। কী পেয়েছেন জানতে চাইলে বললেন, ‘রাস্তা পাইছি, ব্রিজ পাইছি, স্কুল হইছে, হাসপাতাল হইছে। হামরা খুউব সুখে আছি।’

বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১১১টি ছিটমহলের ৫৯টির অবস্থান ছিল লালমনিরহাটে, পঞ্চগড়ে ৩টি, কুড়িগ্রামে ১২টি ও নীলফামারীতে ৪টি। বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের অবস্থান ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। এর ৪৭টি কোচবিহার এবং ৪টি জলপাইগুড়ি জেলায়।

সরেজমিন দাশিয়ারছড়া

দাশিয়ারছড়া ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার ১৬২টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে আয়তন ও লোকসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড়। ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী, দাশিয়ারছড়ার আয়তন ১ হাজার ৬৪৩ একর। বাংলাদেশ হওয়ার পর এই ভূখণ্ড ভাগ হয়ে ফুলবাড়ী, কাশিপুর ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

২০১৫ সালের বাংলাদেশ-ভারত যৌথ জনগণনার তথ্য অনুসারে দাশিয়ারছড়ার জনসংখ্যা ৬ হাজার ৫১৯ জন। অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সে সময় অনেকে বাদ পড়ায় প্রকৃত জনসংখ্যা ১০ হাজারের বেশি হবে। তাঁদের অনেকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের ভোটার হয়েছেন।

দাশিয়ারছড়ায় ঢুকতেই ভারত-বাংলাদেশের আন্তসীমান্ত নীল কমল নদের ওপর একটি ৩৬ মিটার সেতু দেখা গেল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, ২০১৭ সালে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এত দিন ছিটমহলবাসীর যাতায়াতের দুঃখ ছিল এই নীল কমল নদ। এই সেতুর মাধ্যমে সেই দুঃখ দূর হয়েছে।

সেতু পার হলেই চোখে পড়ে রাস্তার পাশে নির্মিত দাশিয়ারছড়া–সংবলিত মানচিত্র ও সাম্প্রতিক উন্নয়নের তথ্যফলক। সেখান থেকে ডান দিকে কালীরহাট সড়ক হয়ে সমন্বয়পাড়া, বোর্ডঘর, রাসমেলা, টংকার মোড়, বানিয়াটারী ও ছোট কামাত গ্রাম ঘুরে দেখা গেল, অনেক ঘরবাড়ি পাকা হয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এসেছে। ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ের সময় এসব ঘরের বেড়া ও ছাউনি ছিল টিনের। এখন কিছুদূর পরপর আধা পাকা ঘর চোখে পড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দাশিয়ারছড়াতে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় করেছে সরকার। স্থানীয় উদ্যোগে নির্মিত তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি কলেজ ইতিমধ্যে পাঠদানের অনুমতি পেয়েছে। জাতীয়করণ হয়েছে একটি মাদ্রাসা। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও আইসিটি ট্রেনিং সেন্টার।

সুযোগ-সুবিধায় খুশি বাসিন্দারা

ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের নেতা আলতাফ হোসেন বললেন, সরকার ছিটমহলের অনেক উন্নয়ন করেছে। ছিটমহলবাসী খুশি।

দাশিয়ারছড়ার বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। এখানকার অন্তত ২০ জন নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।

বানিয়াটারী গ্রামের আলপনা বেগম তাঁর দুই বছরের শিশুকন্যার জন্য যত্ন প্রকল্প থেকে ভাতা পাচ্ছেন। আলপনার সঙ্গে কথা বলার সময় ছিলেন তাঁর প্রতিবেশী আব্দুল জলিল ও আবেদ আলী। আব্দুল জলিল বয়স্ক ভাতা ও আবেদ আলী প্রতিবন্ধী ভাতা পান বলে জানান।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেল, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় দাশিয়ারছড়াতে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও শিক্ষাবৃত্তির সুবিধা পাচ্ছেন অন্তত দুই হাজার মানুষ।

দাশিয়ারছড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মিনহাজুল ইসলাম বললেন, তাঁরা মাসে ৮০০ থেকে
১২০০ নারী, পুরুষ ও শিশুকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। এখানে স্যানিটেশন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে শতভাগ।

দাশিয়ারছড়ার পাকা রাস্তাগুলোর দুধারে ভেষজ উদ্ভিদ বাসকগাছ। এসব গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করছিলেন ৬ জন নারী। জোসনা ও জোবেদা বেগম বললেন, উপজেলা প্রশাসন ও সরকারের স্বল্প আয় প্রকল্পের উদ্যোগে ১৫ হাজার বাসক চারা লাগানো হয়েছিল। তাঁরা ৩২ জন নারী বাসক পাতা বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস বললেন, বিলুপ্ত ছিটমহল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রকল্পের প্রস্তাবনা একনেকে ওঠার কথা রয়েছে। এটি পাস হলে বিলুপ্ত ছিটমহলের মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও ভালো হবে।

তবে ভূমি নিয়ে এখনো সমস্যা আছে। বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, তাঁদের জমি অন্যের নামে রেকর্ড করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু জমিও খাস খতিয়ানভুক্ত হয়েছে।

ফুলবাড়ী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাজারহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আকলিমা বেগম বললেন, বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়াতে আগে ভূমির কোনো রেকর্ড ছিল না। ফলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। আদালতের মাধ্যমে এর সমাধান হবে।

আলমিনা ফিরেছে, কান্না থামেনি

ছিটমহল বিনিময়ের সময় দাশিয়ারছড়া থেকে ভারতে গেছেন ২০৭ জন। তাঁদের একজন আলমিনা। আলমিনা দুই মেয়ে রেখা ও সোহাগীকে নিয়ে ভারতে গেছেন স্বামী রেজাউলের সিদ্ধান্তে। কিন্তু সেখানে তিনি এক মাসও থাকেননি। দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরেছেন। রেজাউল ভারতে আছেন।

২৪ জুলাই বিকেলে আলমিনার সঙ্গে তাঁর বাড়িতে কথা হয়। আলমিনা বলেন, ভারতের কোচবিহারের দিনহাটার একটি অস্থায়ী ক্যাম্প করে সে সময় তাঁদের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ছোট জায়গায় ঠাসাঠাসি করে থাকতে হয়েছিল। সারা দিন কান্না করতেন। একপর্যায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই মেয়েসহ বাংলাদেশে চলে এসেছেন। ভারতে তাঁর স্বামী কেমন আছেন? আলমিনার জবাব, তাঁদের অবস্থা খুব খারাপ। কাজকর্ম নেই। ভারত সরকার যে স্বপ্ন দেখিয়ে তাঁদেরকে নিয়ে গিয়েছিল, তা পূরণ হয়নি।

রেজাউলের বাবা ওমেদ আলী বলেন, ‘ছোয়াটা (ছেলে) মানুষের চক্রান্তে পড়ি ভারত গেইছে। এল্যা ওপার থাকি মোবাইলে কান্নাকাটি করে। এপারে ওর বউ (আলমিনা) কান্দে। ব্যাটার চিন্তায় হামরাও ভালো থাকতে পারি না। সরকারন হামার ছোয়াক আনি দেউক।’

মেরিনা-সরোয়ারের বিচ্ছেদ!

স্বামী সরোয়ার ভারতে যাবেন। স্ত্রী মেরিনা থাকবেন বাংলাদেশে। এই নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন। একপর্যায়ে সরোয়ার স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে ছিটমহল বিনিময়ের দিনে প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় ‘মেরিনা-সরোয়ারের বাঁধন ছিঁড়ে গেল!’ শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়েছিল।

সরোয়ারের গ্রামের বাড়ি কালীরহাটের হাজীটারী। মেরিনা-সরোয়ার দম্পতির খোঁজ নিতে সেখানে যাই। বাড়ির উঠানে কথা হয় সরোয়ারের বড় ভাই মোশারফের সঙ্গে। মোশারফ জানান, তাঁর ভাই-ভাবির সংসার আর টেকানো সম্ভব হয়নি। ছয় মাস আগে বিচ্ছেদ হয়েছে। তাঁদের দুই ছেলে হিমেল (৮) ও সুয়াজ (৬) কখনো দাদার বাড়িতে কখনো নানার বাড়িতে থাকছেন। সরোয়ার কয়েকবার তাঁর ছেলেদের দেখতে এসেছিলেন।

স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে, স্ত্রীর বিধবা ভাতা

আকলিমার গল্পটা আলাদা। তাঁর স্বামী বেঁচে আছেন। তিনি বিধবা ভাতা নিয়ে কোনোমতে চলেছন। কেন? ঘটনা গোপন করলেন না আকলিমা। বললেন, তাঁর স্বামী জয়নাল টাকার লোভে পড়ে ছিটমহল বিনিময়ের সময় ভারতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে বিয়েও করেছেন। পরিবারের খোঁজখবর করেন না। আকলিমা বলেন, ‘অভাবের সংসার। স্বামী থেকেও নেই। সংসারে টাকাপয়সা লাগে। তাই বিধবা ভাতার কার্ড করে নিয়েছি।’

পড়ে আছে তুলসীগাছ, দেশভাগের স্মৃতি

১৯৪৭ সালের দেশভাগ নিয়ে ‘একটি তুলসী গাছের কাহিনী’ নামে গল্প লিখেছেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। ২০১৫ ছিটমহল বিনিময়ের সময়ও এমন ঘটনা ঘটেছিল। দাশিয়ারছড়ার ছোট কামাত গ্রামের রাজেশ্বর অধিকারী সপরিবার ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যাওয়ার আগে তাঁর মৃত্যু হলে ভারতে যায় তাঁর ছেলে কৃষ্ণ, শ্রীদাম ও সুমনের পরিবার।

এই পরিবারটির পুরো জমি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়েছে। জমির একাংশ দিয়ে করা হবে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তা। এই রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ভিটাতে একটি তুলসীগাছ বেড়ে উঠছে।

রাজেশ্বরের একখণ্ড জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছেন তাঁর ভাগনে বিনোদ অধিকারী। বিনোদের স্ত্রী চুনো বালা বললেন, ‘আমরা ভূমিহীন। সরকার এই জমিটুকু দিলে এখানে আবার ঠাকুরঘর তুলব। পূজা করব।’

কয়েকটি দাবি

দাশিয়ারছড়ার ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের নেতারাও উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের দাবি, বিলুপ্ত ছিটমহলের উন্নয়নে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়, সেগুলোতে তদারকি বাড়ানো প্রয়োজন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, অনেকে ছিটমহলকে টাকা আয়ের উৎস হিসেবে দেখছেন। এখানে স্থানীয় উদ্যোগে স্থাপিত স্কুল ও কলেজগুলোতে নিয়োগ–বাণিজ্য হয়েছে, হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হরেকৃষ্ণ রায় এসব তৎপরতা বন্ধ করে যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্তির দাবি করেন।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বললেন, ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চু্ক্তির আলোকে ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। তাঁদের অবদানকে স্মরণে রাখতে দাশিয়ারছড়াকে মুজিব-ইন্দিরা ইউনিয়ন করার দাবি করেন তিনি।

এই ছিটমহল বিনিময়ের সময়টায় পররাষ্ট্রসচিব ছিলেন মো. শহীদুল হক। তিনি এখন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের (এসআইপিজি) জ্যেষ্ঠ ফেলো। জানতে চাইলে গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ঐতিহাসিক এ সংকটের সমাধান জীবনে কী পরিবর্তন আনবে, ছিটমহল বিনিময়ের আগে সেখানকার লোকজনের এ বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না। পরিচয়বিহীন এসব মানুষের আত্মপরিচয়ের সংকট ছিল। তাঁরা বঞ্চিত ছিলেন মৌলিক অধিকার থেকে। ছিটমহল বিনিময়ের পর যে সুফল তাঁরা পেয়েছেন, তাতে তাঁদের জীবনের অতীতের অস্বস্তিগুলোর অবসান হয়েছে। উপমহাদেশ বিভক্তির সময় থেকে চলে আসা এই জটিল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান এই অঞ্চলের মানুষকে শান্তি ও সম্প্রীতিতে বসবাসে আরও একবার উৎসাহিত করল এই ছিটমহল বিনিময়।