বিশ্বে প্রথম জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত অবমুক্ত করল বাংলাদেশ

বিশ্বে এবারই প্রথম জিংকসমৃদ্ধ একটি ধানের জাত অবমুক্ত করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত বিরি-৬২ নামের এই জাতসহ মোট আটটি নতুন ধানের জাত অবমুক্ত করেছে জাতীয় বীজ বোর্ড। গতকাল সোমবার জাতীয় বীজ বোর্ডের অবমুক্ত করা জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রির বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত বিরি-৫৯, ৬০, ৬১ ও ৬২ নামের চারটি এবং বাংলাদেশ আণবিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) উদ্ভাবিত বিনা-১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নামের চারটি ধানের জাত। দেশি-৮ ও তোষা-৬ নামের পাটের দুটি জাতও গতকাল অবমুক্ত করে বীজ বোর্ড। ধান ও পাটের এসব জাতই উচ্চফলনশীল বা উফশী জাত।

দেশি ধানের সঙ্গে পরাগায়নের মাধ্যমে জিংকসমৃদ্ধ বিরি-৬২ নামের জাতটি উদ্ভাবনে সহায়তা করেছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি), যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হারভেস্ট প্লাস ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। অন্যান্য ধানের জাতের মধ্যে সাধারণত প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ মিলিগ্রাম জিংক ফরটিফায়েড ও ৬ শতাংশ প্রোটিন থাকে। বিরি-৬২ ধানের প্রতি কেজিতে ১৯ মিলিগ্রাম জিংক ও ৯ শতাংশ প্রোটিন রয়েছে। এই জাতের চাল খেলে মানুষের শরীরে আয়রন ও প্রোটিনের চাহিদা অনেকাংশে মিটবে বলে আশা করছেন ব্রির বিজ্ঞানীরা। এই ধানের চাল খেলে শরীরে রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতাও বাড়বে।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিরি-৬২ কোনো হাইব্রিড ধান নয়। দেশি ধানের সঙ্গে পরাগায়নের মাধ্যমে এই জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। আগামী আমন মৌসুম থেকে এই ধানের বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে এবং তা চাষের জন্য প্রচারাভিযান চালানো হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, এই ধান আমন মৌসুমে জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে, ১০৫ দিনের মধ্যে উৎপাদিত হবে। চাল হবে মাঝারি আকারের। প্রতি হেক্টরে উৎপাদিত হবে ৪ দশমিক ২ মেট্রিক টন। অন্য জাতগুলোর মধ্যে বিরি-৫৯, ৬০ ও ৬১ বোরো মৌসুমে চাষযোগ্য এবং ওই মৌসুমের মেগা জাত বিআর-২৮-এর চেয়ে এগুলোর ফলন বেশি। প্রতি একরে এটি সাত টনেরও বেশি ফলন দেবে। এ ছাড়া বিনা-১১ ও ১২ হচ্ছে জলমগ্ন সহিষ্ণু জাত। এটি ২০ থেকে ২৫ দিন পানির নিচে ডুবে থেকেও টিকে থাকতে পারে।