বিয়ে করতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ৬ কিশোর-কিশোরী

প্রতীকী ছবি

ছয় কিশোর–কিশোরী। একই এলাকায় বড় হয়েছে সবাই। তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ে করার জন্য তারা ঢাকা থেকে পালিয়ে যায় চট্টগ্রামে। গতকাল শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

তাদের মধ্যে তিন কিশোরের বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। আর তিন কিশোরীর বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। পাঁচজনের বাড়ি ঢাকার ধামরাই উপজেলায়। আর একজনের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায়। তবে সে উপজেলার একই গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকে।

পুলিশ জানায়, তাদের মধ্যে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোরীর বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু তার এক কিশোরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই কিশোর–কিশোরী বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও চারজন। তারাও নিজেদের পছন্দের জনকে বিয়ে করতে চায়। এক সপ্তাহ ধরে তারা পরিকল্পনা করে। গত বৃহস্পতিবার সকালে সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় যায়। বিকেলের ট্রেনে করে চট্টগ্রাম চলে যায়। তাদের মধ্যে এক কিশোরের পূর্বপরিচিত এক দোকানদার নগরের বন্দরটিলা এলাকায় ছিলেন। তাঁর ওপর ভরসা করেই সবাই চট্টগ্রামে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা ওই দোকানদারকে খুঁজে পায়নি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তারা মাত্র ছয় হাজার টাকা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়। বন্দরটিলা এলাকায় ওই দোকানদারকে না পেয়ে রাতে থাকার জন্য একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের সাহায্য চায়। নগরের ফ্রি পোর্ট এলাকায় ৭০০ টাকা দিয়ে এক বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন ওই অটোচালক। ঘোরাঘুরি ও থাকা–খাওয়ায় তাদের সঙ্গে থাকা বেশির ভাগ টাকা খরচ হয়ে যায়। ইতিমধ্যে তারা বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। বাসের টিকিট কাটতে গেলে টাকা কম পড়ে। পরে তারা সিদ্ধান্ত নেয়, ট্রেনে করে বাড়ি ফিরবে।

ওসি নেজাম উদ্দিন আরও বলেন, ছয় কিশোর–কিশোরী বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিল। তাদের ব্যাগে কসমেটিকস ও শাড়ি পাওয়া যায়। ওই দোকানদারকে না পেয়ে তারা সেই সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা দেরি করে। কিশোর-কিশোরীরা সবাই নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। দুই কিশোরীর মা প্রবাসী শ্রমিক। ছয় কিশোর–কিশোরীকে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হচ্ছে।

পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় না হওয়ার কারণে কিশোর-কিশোরীরা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বলে মনে করেন ওসি নেজাম উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, অভিভাবকদের সচেতন হওয়া জরুরি। বিয়ে ছাড়াও ছয় কিশোর–কিশোরী যেকোনো ধরনের বিপদে পড়তে পারত। তাদের কাছে খরচের মতো টাকাপয়সাও নেই। রেলস্টেশন থেকে এ কারণে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ জন্য সন্তানদের মা-বাবার সময় দেওয়া উচিত।