বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ বন্ধ, দিনভর বিদ্যুৎহীন

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। মাঝে মাঝে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চলে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কাটাতে হয়েছে নগরবাসীকে। দুপুরে প্রায় তিন ঘণ্টা ১১ টি সঞ্চালন লাইন বন্ধ ছিল। সন্ধ্যায়ও একাধিক এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। 

নগরবাসীর অভিযোগ, একটু বাতাস কিংবা বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বিদ্যুৎ–সংযোগ পাওয়া যায় না। আবার সংযোগ দিলেও এক ঘণ্টা পরপর বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, গতকাল ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ চমকায়। বৃষ্টির সঙ্গে বিদ্যুৎ চমকানোর কারণে সঞ্চালন লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তবে বরিশালের ১১টি সঞ্চালন লাইনের মধ্যে ১০টি বিকেল চারটার মধ্যে চালু করা হয়েছে। একটি লাইনের ওপর গাছ পড়ায় সেটি সন্ধ্যার আগে চালু করা সম্ভব হয়নি।

বরিশাল আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৪৩ মিলিমিটার। এর সঙ্গে ঝোড়ো বাতাস থাকায় বরিশাল অঞ্চলে ২ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়।

নগরের কালীবাড়ি সড়কের বাসিন্দা আশরাফুর রহমান বলেন, একটু বৃষ্টি নামলেই বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেয়। বৃষ্টি শেষ হলেও সংযোগ দেয় না। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। বেলা একটার দিকে বিদ্যুৎ এলেও দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আকাশে মেঘ–বৃষ্টি ও বাতাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যায়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিদ্যুৎ এসেছে। একই অভিযোগ করেন সামসুন্নাহার নিপা, ফিরোজ আহমেদ, রেজাউল হকসহ অনেকে।

নগরের বদ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা মে. মাজহারুল আলম বলেন, গতকাল সকালে বাতাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে গেছে। এরপর ফাঁকে একবার এসেছিল। তারপর আবারও বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল চারটার দিকে সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

সদর রোডের বাসিন্দা মো. হিরা হাওলাদার বলেন, বিদ্যুৎ তো আসা-যাওয়ার মধ্যে আছে। বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সারা দিনই বিদ্যুৎ ছিল না। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়নি।’

বরিশাল ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নির্বাহী প্রকৌশলী অমূল্য কুমার সরকার বলেন, বাতাস বা বৃষ্টি নামলেই বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়, এটা সঠিক নয়। গতকাল বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে বিদ্যুৎ চমকানোয় বিদ্যুতের জন্য ঝুঁকি ছিল। তাই দুপুরের দিকে বরিশালের পুরো এলাকার সঞ্চালন লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিকেল চারটার মধ্যে ১০টি লাইন চালু করা হয়েছে।