ভারতের পতিতালয়ে নববধূকে বিক্রি, স্বামীর যাবজ্জীবন

বিয়ের মাত্র নয় মাস পর বেড়ানোর কথা বলে নববধূকে ভারতে নিয়ে গিয়েছিলেন স্বামী মেছের আলী। সেখানে এক পতিতালয়ে তিনি স্ত্রীকে বিক্রি করে দেন। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর স্ত্রী দেশে ফিরে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। আজ বুধবার আদালত ওই মামলায় মেছের আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে আদালত তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। 

মেছের আলীর বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে । মামলার পর থেকে তিনি পলাতক।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালের ২২ জুন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার এক নারীর সঙ্গে মেছের আলীর বিয়ে হয়। মেছের আলী নববধূকে নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়িতে যান। নয় মাস পর একদিন সকালে তিনি বেড়ানোর কথা বলে অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে স্ত্রীকে ভারতে নিয়ে যান। সেখানে তিনি কৌশলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির খালপাড়া পতিতালয়ে স্ত্রীকে বিক্রি করে দেশে ফেরেন। সাড়ে তিন বছর পর ২০০৪ সালের জুন মাসে সুযোগ বুঝে ওই নারী পতিতালয় থেকে দেশে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। খবর পেয়ে মেছের আলী ওই বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে আবার নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। পরে ব্যর্থ হলে তিনি হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় ২০০৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর ওই নারী হাতীবান্ধা থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহযোগিতায় ওই নারী লালমনিরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ জজ আদালতে স্বামী মেছের আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়া, হত্যার হুমকিসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে হাতীবান্ধা থানার পুলিশ লিখিত অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে। ২০০৫ সালের ১৬ মে পুলিশ মেছের আলীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। দীর্ঘ শুনানির পর আজ বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিঞা মোহাম্মদ আলি আকবার আজিজী স্বামী মেছেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আকমল হোসেন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেছের আলী পলাতক। গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকে তাঁর সাজার সময় গণনা শুরু হবে।