ভালোবাসার ৮০ হাজার লাল গোলাপ!
বসন্তের প্রথম দিন থেকেই বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্কে ফুলের বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছিল। পয়লা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসব আর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে ফুল কিনতে আসা মানুষের ভিড়ভাট্টায় জমজমাট হয়ে উঠেছিল শহরের এই ফুলের বাজার। ফুলের দোকানগুলোতে রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন ক্রেতারা। এ দুই দিনে প্রায় ৮০ হাজার ফুল বিক্রি হয় বলে ফুল বিক্রেতাদের সূত্রে জানা গেছে।
গত দুই দিনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছিল লাল গোলাপ। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় একটা লাল গোলাপের দাম ৫ থেকে এক লাফে উঠে গিয়েছিল ৩০ টাকায়। গ্লাডিওলাস, জারবেরা, রজনীগন্ধার মতো ফুলের দামেও আগুন লেগেছিল।
বগুড়া জেলা ফুল ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম সদস্য ও জুয়েল ফুলঘরের মালিক রমজান আলী বলেন, মার্কেটে ২৭টি স্থায়ী ফুলের দোকান রয়েছে। ভালোবাসা দিবস, বসন্ত উৎসব ও সরস্বতী পূজাকে সামনে রেখে কয়েকটি অস্থায়ী দোকানও বসেছে। এবার একসঙ্গে তিনটি উৎসবের কারণে ফুল বিক্রি ভালো হয়। তিনি আরও বলেন, অন্যবার শুধু যশোরের পাইকারি মোকাম থেকে ফুল এলেও এবার ভালোবাসা দিবসে স্থানীয় বাগান থেকেও রেকর্ড পরিমাণ গোলাপ এসেছে। সব মিলিয়ে এবারের ভালোবাসা দিবসে প্রায় ৮০ হাজার গোলাপ, ২০ হাজার গ্লাডিওলাস, ২০ হাজার হাইব্রিড জাতের রজনীগন্ধা (ভুট্টা), এক হাজার আঁটি জিপসি, পাঁচ হাজার রডস্টিক ও এক হাজার জারবেরা ফুল এসেছে বাজারে।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে চায়না জাতের লাল গোলাপ এই বাজারে বিক্রি হতো প্রতিটি পাঁচ টাকা দরে। এখন সেই গোলাপ ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫ টাকার গ্লাডিওলাস বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, তিন টাকার রজনীগন্ধা ছয় টাকায়, গুচ্ছকরা বুকেট ৪০ টাকারটা ১০০ টাকায় ও ২০ টাকার জারবেরা এখন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফুল কিনতে আসা বগুড়ার একটি সরকারি কলেজের ছাত্রী রোমানা আফরোজ বলেন, ‘ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনের জন্য ফুল কিনতে এসেছি। দাম বেশি হলেও এখন উপায় নেই। ফুল কিনতেই হবে।’
স্কুলছাত্রী তামান্না বুশরা বলে, ‘ভালোবাসা দিবস আব্বু-আম্মুকেও উইশ করার জন্য। তাঁদের জন্য ফুল কিনতে এসেছি। গোলাপের দামটা বড্ড বেশি।’
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, ভালোবাসা দিবসে বেশি ফুল বিক্রি হলেও এবার লাভ হয়েছে কম। কারণ, পাইকারি বাজারে গতবারের চেয়ে ফুলের দাম এবার বেশি।
বিউটি ফুলঘরের মালিক ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি অজিত কুমার দাশ বলেন, এবার ভালোবাসা দিবসের সঙ্গে বসন্ত উৎসব ও সরস্বতী পূজা একসঙ্গে হওয়ায় ফুলের চাহিদা অন্যবারের চেয়ে বেশি। এ কারণে অন্যবারের চেয়ে বিক্রি বেশি হলেও পাইকারি মোকামে অন্যবারের চেয়ে দাম বেশি হওয়ায় তুলনামূলক লাভ হচ্ছে খুব সীমিত।
ফুল ব্যবসায়ী এই নেতার দাবি, গতবার যশোর পাইকারি বাজারে ১০০ চায়না লাল গোলাপের দাম ছিল গড়ে ৮০০ টাকা। এবার সেই লাল গোলাপ কিনতে হয়েছে গড়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। একইভাবে গতবারের ৮০০ টাকার গ্লাডিওলাস এবার ১০০ কিনতে হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকায়।