ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিয়ে ঢাকায় মোদি

ভারতের মানুষের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানিয়েছে সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সঙ্গে তাঁর আশা, সফরটি সুন্দর হবে, যা ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে।
আজ শনিবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসার পর টুইটারে বাংলা ও ইংরেজিতে টুইট করে এসব কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
দুই দিনের সফরে মোদি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর এই সফর ঘিরে দুই দেশে উচ্চাশা সৃষ্টি হয়েছে।
মোদিকে বহন করা ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইট ‘রাজদূত’ সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় বিমানের সামনে দুই পাশে পতপত করে উড়ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় পতাকা।
১০টা ২৫ মিনিটের দিকে বিমান থেকে বেরিয়ে আসেন মোদি। তিনি হাত নাড়েন, নমস্কার জানান। বিমানের সিঁড়ি থেকে নেমে লাল গালিচায় পা রাখেন মোদি। তাঁকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফুল দিয়ে মোদিকে বরণ করা হয়। এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
বিমানবন্দরে এসব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতে না হতেই টুইটারে দুটি বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজিতে চারটি টুইট করেন মোদি।
প্রথমে বাংলায় করা এক টুইটে মোদি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ, আমি আমার সাথে ভারতের মানুষের ভালবাসা এবং শুভেচ্ছা নিয়ে আসছি।’
একই বিষয়ে পরক্ষণেই ইংরেজিতে পৃথক একটি টুইট করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

মাত্র এক মিনিটের ব্যবধানে বাংলায় দ্বিতীয় টুইটটি করেন মোদি। এই টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ। আমি একটি সুন্দর সফর আশা করছি, যা ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করবে।’
প্রথমটির মতো দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রেও পৃথকভাবে ইংরেজিতে টুইট করেন মোদি।
এর আগে সকালে ঢাকায় রওনা দেওয়ার প্রাক্কালে টুইটারে আরেকটি টুইট করেন মোদি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশে যাচ্ছি। এই সফর দুই জাতির বন্ধন সুদৃঢ় করবে, আমাদের দুই দেশ ও অঞ্চলের জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনবে।’
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান মোদি। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে শীর্ষ বৈঠক করবেন মোদি। শীর্ষ বৈঠকের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিস ও কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন।
এরপর দুই প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী একান্তে কথা বলবেন। তাঁদের আলোচনা শেষে সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় হবে। পরে দুই প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন।

আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর বিভিন্ন প্রকল্পের ফলক উন্মোচন শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চুক্তি, সমঝোতা স্মারক, প্রটোকল ও সম্মতপত্র সই হবে। দুই প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পর শেষ হবে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের অনুষ্ঠান। রাতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে তাঁর সম্মানে শেখ হাসিনার দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন নরেন্দ্র মোদি।
ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় দিনের কার্যসূচি। এরপর তিনি যাবেন রামকৃষ্ণ মিশনে। সেখান থেকে তাঁর পরবর্তী গন্তব্য বারিধারা কূটনৈতিক জোনের দূতাবাস সড়কে ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি। সেখানে তিনি চ্যান্সেরির উদ্বোধন করবেন। দুপুরে তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে বাজপেয়ির পক্ষে নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা সম্মাননা গ্রহণ করবেন। এরপর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজ সারবেন মোদি।
কাল বিকেলে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যায় তিনি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে জনবক্তৃতা দেবেন। বক্তৃতা অনুষ্ঠান শেষে সরাসরি বিমানবন্দরে গিয়ে দিল্লির পথে যাত্রা করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন.... ঢাকায় নরেন্দ্র মোদিঢাকার পথে মোদিমোদির টুইট: ‘বাংলাদেশে যাচ্ছি’