ভাস্কর্য নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না করতে তথ্যমন্ত্রীর আহ্বান
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে যাঁরা ফতোয়া দিয়েছিলেন, তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম এখন ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে। স্বাধীন বাংলাদেশে মৌলবাদী অপশক্তি, ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। ভাস্কর্য নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট।
ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির পরবর্তী প্রজন্ম চায় না দেশ এগিয়ে যাক। ১৯৭১ সালে একশ্রেণির ব্যক্তি ফতোয়া দিয়েছিল, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যারা লড়ছে, তারা কাফের। মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠনের পক্ষেও তারা ফতোয়া দিয়েছিল। এমন ফতোয়া যারা দিয়েছিল, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে। তাদের অনুসারীরা ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়ে একশ্রেণিকে উসকে দিচ্ছে।
দেশে শত শত বছর ধরে বহু ভাস্কর্য রয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে যখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মিত হচ্ছে, তখনই তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। এটি রহস্যজনক। মৌলবাদী অপশক্তিকে পরাজিত করে বাংলাদেশের জন্ম। সেই স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।
মির্জা ফখরুলকে অবস্থান পরিষ্কার করতে আহ্বান
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভাস্কর্য ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করুন। অপশক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের বক্তব্য স্পষ্ট করুন। অন্যথায় ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারীদের ইন্ধনদাতা হিসেবে চিহ্নিত হবেন।’
গতকাল মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি চলমান ভাস্কর্য বিতর্ক নিয়ে কিছু বলতে চান না। কারণ, এটি তাঁর কাছে কোনো ইস্যু না।
ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারীদের দৃষ্টি প্রসারিত করার আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবসহ অন্যান্য আরব মুসলিম দেশে প্রাণী, মানুষের মুখায়বসহ নানা ধরনের ভাস্কর্য রয়েছে। ‘ভাস্কর্য নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না, নিজেদের বিভ্রান্তি দূর করেন।’ ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা বরদাশত করা হবে না।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, শিল্পী এস ডি রুবেল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।